প্রতীকী ছবি।
খাদ্যসামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। এ বার বারাসত-২ ব্লকে ১৫তম দফায় মিড-ডে মিলের অধিকাংশ খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব স্কুলগুলিকেই দেওয়া হল। শুক্রবার রাতে এই বাবদ অগ্রিম টাকাও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুলগুলি। কাল, ২১ জুন থেকে ওই বিলিবণ্টন শুরু হওয়ার কথা। এ বিষয়ে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত শনিবার শুধু বলেন, ‘‘খাদ্যসামগ্রী যে কেউ দিতে পারেন। আমরা শুধু চাই, গুণগত মান যেন বজায় থাকে। এর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে।’’
উল্লেখ্য, বারাসত-২ ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে ১২ এবং ১৪তম দফায় মিড-ডে মিলের সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দু’টি সংস্থাকে। ওই দুই দফাতেই নিম্নমানের ডাল, ছোলা ও সয়াবিন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে শিক্ষকদের একাংশ জেলাশাসকের দফতরে চিঠি পাঠান। বেশ কয়েকটি ব্লকে ওই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। জেলাশাসক নিজে খোঁজখবর নেন।
এর পরে গত ১৬ জুন বিডিও-র দফতর থেকে যে অর্ডার বেরোয়, তাতে বলা হয়, এ বার আলু, চিনি, সয়াবিন, ডাল ও সাবান কিনবে স্কুলগুলি। শনিবারের মধ্যে ওই সব সামগ্রী প্যাকেটবন্দি করার কাজ শেষ করতে বলা হয়। খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মানার পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রীর নমুনা যাচাই ও তার গুণগত মান ঠিক রাখা-সহ নানা রকম শর্ত চাপানো হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরে। শর্তে রয়েছে, কাউকে কোনও অগ্রিম টাকাও দেওয়া যাবে না।
কিন্তু সরকারি নিয়ম মানে কি টেন্ডারও ডাকতে বলা হয়েছে? বিষয়টি জানতে শুক্রবার জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর প্রতিনিধিরা। তাঁরা ওই আধিকারিককে জানান, কার্যত লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে কয়েক দিনের মধ্যে টেন্ডার ডেকে, মিড-ডে মিলের খাবার কিনে, তার নমুনা ও গুণমান যাচাই করে সরবরাহ করা স্কুলগুলির পক্ষে সম্ভব নয়।
ওই সংগঠনের উত্তর ২৪ পরগনার সম্পাদক সমীর ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘টেন্ডার ছাড়া জিনিসপত্র কিনলে পরে জটিলতা তৈরির আশঙ্কা করছে স্কুলগুলি। নমুনার অনুমোদন বিডিও-র দফতর থেকে আসার মতো সময় হাতে নেই। নিয়মে বলা হয়েছে, জিনিসপত্র খারাপ বেরোলে পুরো অর্ডার বাতিল হবে। তখন তো স্কুলের উপরে ব্যয়ভার চাপবে। সব শেষে বলা হয়েছে, কোনও অগ্রিম দেওয়া যাবে না। স্কুলের এত তহবিল থাকে কি?’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এর আগেও স্কুল থেকে আমরা মিড-ডে মিল দিয়েছি। তখন তো এত শর্ত চাপানো হয়নি। এ বারে কেন?’’
এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘আমরা কোথাও দাবি করিনি যে, আমরাই খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করব। আমরা শুধু গুণগত মান ঠিক রাখতে বলেছি।’’ এ দিন বিডিও অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল কাউকে কোনও অগ্রিম দেবে না, সেটাই বলতে চাওয়া হয়েছে। স্কুলের তহবিল না থাকলে আমাকে জানাচ্ছে না কেন?’’