মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে আসছেন অখিলেখ যাদব। —ফাইল চিত্র।
রাত পোহালেই তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ। এমনিতে দিনটি ‘শহিদ দিবস’ হিসাবেই পালন করে থাকে তৃণমূল। কিন্তু এ বার দিনটি একই সঙ্গে লোকসভা ভোট এবং তার পরে বিধানসভা উপনির্বাচনের সাফল্যের ‘বিজয় দিবস’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বার তার সঙ্গেই এই সমাবেশ থেকে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের দিশাও দেখাতে পারেন বলে মনে করছে দলের একাংশ। তবে রবিবারের মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি থাকবে উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির প্রধান নেতা অখিলেশ যাদবের।
অখিলেশ যে ওই সভায় আসবেন, শনিবার তা জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী কিরণময় নন্দ। অখিলেশের উপস্থিতিতে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের সুর নিঃসন্দেহে আরও জোরালো ভাবে বাজবে। সভায় থাকবেন কিরণময়ও। শনিবার পর্যন্ত যা খবর, রবিবার সকালে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি অখিলেশ-কিরণময় পৌঁছে যাবেন ধর্মতলার মঞ্চে। মমতার সভায় বক্তৃতা করবেন অখিলেশ। সভা শেষে আবার দিল্লি ফিরবেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান।
অনেকের ধারণা, রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের চেয়েও একুশে জুলাইয়ের গুরুত্ব ঘাসফুল শিবিরের কাছে অনেক বেশি। মমতা শনিবার তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, “২১ জুলাই বাংলার ইতিহাসে রক্তঝরা এক দিন। অত্যাচারী সিপিএমের নির্দেশে সে দিন চলে গিয়েছিল তরতাজা ১৩টি প্রাণ। আমি হারিয়েছিলাম আমার ১৩ জন সহযোদ্ধাকে। তাই ২১ জুলাই আমার কাছে, আমাদের কাছে একটা আবেগ। ২১ জুলাই আজ বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অন্তরঙ্গ অংশ।” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এক্স হ্যান্ডলে আরও লিখেছেন, “প্রতি বছর এই ঐতিহাসিক দিনে শ্রদ্ধায়, ভালবাসায় আমরা বীর সেই শহিদদের তর্পণ করি। শুধু তাঁরাই নন, দেশ ও দশের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে এই দিনে আমরা স্মরণ করি। সেই সঙ্গে আমরা এই দিনটিকে মা-মাটি-মানুষ দিবস হিসেবে পালন করি। নির্বাচনে আমাদের যে গণতান্ত্রিক জয়, তাকে মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করি। সে জন্যও এ দিন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।”
এই পোস্টে নির্বাচনে তাঁদের গণতান্ত্রিক জয়ের প্রসঙ্গটি সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোট এবং তার পরে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জয়ের নিরিখেই লিখেছেন বলে দলের প্রথম সারির নেতারা মনে করছেন। বাংলায় বিজেপিকে পর্যুদস্ত করে ২৯টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। তার পর দলের এই প্রথম বড় রাজনৈতিক সমাবেশ। প্রত্যাশিত ভাবেই এই সমাবেশে রেকর্ড ভিড় করার চেষ্টা করবে তৃণমূল। দলের সমর্থকেরা ইতিমধ্যেই শহরে আসতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে দলের তরফে।
বাংলার মতো উত্তরপ্রদেশেও বিজেপিকে রুখে দিয়েছেন অখিলেশ। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে সাম্প্রতিক ভোট রাজনীতিতে বিরোধীদের ফলাফলের নিরিখে সবচেয়ে সফল হয়েছেন তাঁরা। উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক সপা এবং কংগ্রেসের জোট ৪৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। তার মধ্যে সপা একাই জিতেছে ৩৮টি আসনে। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূলও। ভাদোহি লোকসভা কেন্দ্রটি তৃণমূলের জন্য ছেড়ে দিয়েছিল সপা। বিজেপি সেখানে জিতলেও সপার সমর্থনে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন মমতার প্রার্থী ললিতেশপতি ত্রিপাঠী।