RG Kar Medical College and Hospital Incident

‘আমি কিছু করিনি, কিছুই জানি না হুজুর’, কোর্টে দাবি আরজি করে ধর্ষণ-খুন মামলায় প্রধান অভিযুক্তের

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়া খুনের ঘটনায় সোমবারই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি মঙ্গলবার মূল অভিযুক্তকে দেওয়া হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪০
Share:

প্রতীকী গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তিনি কিছু করেননি। তিনি কিছুই জানেন না। আরজি করে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার চার্জশিটের প্রতিলিপি পাওয়ার পর এমনটাই দাবি করেছেন ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়া খুনের ঘটনায় সোমবারই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি মঙ্গলবার মূল অভিযুক্তকে দেওয়া হয়। সরকারি আইনজীবীর কাছ থেকে সই করে নেওয়া সেই প্রতিলিপি দেখে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার দাবি করেন, তিনি কিছু করেননি। তিনি কিছু জানেন না।

Advertisement

মঙ্গলবার ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। এজলাসে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলতে চাই।’’ এর পরেই তাঁকে কাঠগড়ায় আনা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলতে চাই। আগের দিনও বলতে পারিনি। কিছু বলতে না পারলে তো সব দোষ আমার উপর পড়বে।’’ বিচারক তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আপনার যা বলার, সব বলতে পারবেন।’’ অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার তখন বলেন, ‘‘হুজুর, আমি কিছু করিনি। ঘটনার বিষয়ে কিছু জানি না।’’ এর পরে ধৃতকে অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারকের কাছে আনা হয়।

পরবর্তী শুনানিগুলি যাতে ‘ইন-ক্যামেরা’ (একান্তে, সর্বসমক্ষে নয়) হয়, সিবিআইয়ের আইনজীবী সেই দাবি তুলেছেন। ধৃতের আইনজীবীর দাবি, সিবিআইয়ের চার্জশিটে বেশ কিছু ছবির কথা বলা হয়েছে। সেগুলি এখনও হাতে পাননি তাঁরা। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু ছবি তাঁরা পরে দেবেন। আর কিছু ছবির ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে। ধৃতের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে চান। বিচারক এই নিয়ে লিখিত আবেদন জানাতে বলেছেন।

Advertisement

আরজি কর-কাণ্ডের ৫৮ দিনের মাথায় সোমবার শিয়ালদহ আদালতে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সূত্রের দাবি, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের নামের উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (দীর্ঘ ক্ষণ সংজ্ঞাহীন থাকা অবস্থায় ধর্ষণ) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি মঙ্গলবার সরকারি আইনজীবী ধৃতের আইনজীবীর কাছে দেওয়া হয়েছে। সই করে তা গ্রহণ করেছেন ধৃত। তার পরেই আদালতে সিভিক ভলান্টিয়ার দাবি করেছেন, কিছুই জানেন না তিনি।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার রুমে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। ওই রাতেই কলকাতা পুলিশের সল্টলেকের ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পরে মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। তখন ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেয় তারা। আদালতের অনুমতি নিয়ে এর আগে পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারের। সেখানে তাঁকে ১০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃত পলিগ্রাফ পরীক্ষায় যে যে উত্তর দিয়েছিলেন, তাতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। সেই কারণে তাঁরা নার্কো পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পলিগ্রাফ কিংবা নার্কো, উভয় ক্ষেত্রেই অভিযুক্তের সম্মতির প্রয়োজন হয়। নার্কো পরীক্ষার ক্ষেত্রে ধৃতের সম্মতি না মেলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। ধৃতের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও উঠেছিল। কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি ছিল, কোনও অনুতাপ বোধ ছিল না অভিযুক্তের মধ্যে। এ বার সেই সিভিক আদালতে দাবি করলেন, তিনি এ সব কিছুই জানেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement