গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে তুলে দেওয়া হল প্রথম চার্জশিটের প্রতিলিপি। মঙ্গলবার তাঁকে শিয়ালদহ কোর্টে সশরীরে হাজির করানো হয়েছিল। সেখানেই ধৃত সিভিকের হাতে সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি তা সই করে গ্রহণ করেছেন। শিয়ালদহ আদালতে সোমবার আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা করেছিল সিবিআই। বিচারক তা গ্রহণ করেছেন। বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারকের কাছে মঙ্গলবার পাঠানো হয়েছে সেই চার্জশিট।
হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার ৫৮ দিনের মাথায় সোমবার চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। সূত্রের দাবি, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের নামের উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (দীর্ঘ ক্ষণ সংজ্ঞাহীন থাকা অবস্থায় ধর্ষণ) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেই চার্জশিটের প্রতিলিপি মঙ্গলবার ধৃতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পরে তা ধৃতের আইনজীবীর কাছে দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। ওই রাতে কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারকে সল্ট লেকের ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পরে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। তখন ধৃত সিভিককেও হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতের অনুমতিতে তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হয়। নির্দিষ্ট ১০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় রাজি হলেও নার্কো পরীক্ষায় রাজি হননি অভিযুক্ত। তাঁর নার্কো পরীক্ষা করতে চেয়ে সিবিআই শিয়ালদহ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু ধৃত সম্মতি না দেওয়ায় সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, ধৃত পলিগ্রাফ পরীক্ষায় যে যে উত্তর দিয়েছিলেন, তাতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। সেই কারণে তাঁরা নার্কো পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পলিগ্রাফ কিংবা নার্কো, উভয় ক্ষেত্রেই অভিযুক্তের সম্মতির প্রয়োজন হয়। নার্কো পরীক্ষার ক্ষেত্রে ধৃতের সম্মতি না মেলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার আবেদন খারিজ হয়েছিল আদালতে। এখন প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন অভিযুক্ত। গত শুনানিতে তাঁর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, জেলে একাকিত্বে ভুগছেন ধৃত সিভিক। অভিযুক্তকে জেলের মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি।