Hunger Strike of Junior Doctors

নাটকীয় সিদ্ধান্ত! জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সমর্থনে আরজি করের ৫০ জন সিনিয়রের গণইস্তফা

ধর্মতলায় ১০ দফা দাবিতে সাত জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করছেন। তাঁদের সমর্থনে গণইস্তফা দিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:২৫
Share:

গণইস্তফা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের। —নিজস্ব চিত্র।

আরজি কর আন্দোলনে নাটকীয় মোড়। ধর্মতলায় ১০ দফা দাবিতে সাত জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করছেন। তাঁদের এই আন্দোলনের সমর্থনে মঙ্গলবার গণইস্তফা দিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরা। এই পদক্ষেপের পর সিনিয়র ডাক্তারদের ‘গার্ড অফ অনার’ দিতে দেখা গিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের।

Advertisement

রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে গণইস্তফা দিয়েছেন আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারেরা। রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে দেওয়া চিঠিতে তাঁদের দাবি, আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করুক। আরজি করের এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমরণ অনশন হল একেবারে শেষ অস্ত্র। বাধ্য হয়েই জুনিয়র চিকিৎসকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ আড়াই দিন হয়ে গেল ওঁরা অনশন করছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আমরা চাই সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করুক। এখন আমরা গণইস্তফা দিলাম। এর পর আমরা ব্যক্তিগত ভাবে ইস্তফার পথেও হাঁটব।’’

রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে দেওয়া আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারদের চিঠি।

গত শনিবার থেকে ধর্মতলায় অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দাবিদাওয়া যাতে দ্রুত মেনে নেয় সরকার, সেই দাবিতে গণইস্তফা দিলেন ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেই গত শনিবার অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিন্তু সিনিয়র ডাক্তারেরা এ বার গণইস্তফা দেওয়ায় পুজোর মধ্যে আরজি করের চিকিৎসা পরিষেবা অংশত বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন, আগামী ১০ তারিখের মধ্যে রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ৯০ শতাংশ উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হয়ে যাবে। মুখ্যসচিব কোনও মাসের উল্লেখ করেননি। তবে কাজের অগ্রগতির হার নিয়ে মুখ্যসচিব যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী হাসপাতালে রেফারেল সিস্টেমের পাইলট প্রোজেক্টও চালু হবে আগামী ১৫ তারিখ থেকে। লক্ষ্য— ১ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে ওই ব্যবস্থা চালু করা। পন্থ বলেন, ‘‘আমরা সবাইকে কাজে ফিরে আসতে অনুরোধ করছি। অনেকে ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরুন। মানুষকে পরিষেবা দিন। আমরা সবাই মিলে হাসপাতালের পরিবেশের উন্নতির চেষ্টা করছি। এবং কাজ যে হচ্ছে, সেটাও দেখা যাচ্ছে।’’

ঘটনাচক্রে, মুখ্যসচিবের সেই আশ্বাসের পরের দিনই গণইস্তফার সিদ্ধান্ত নিলেন আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারেরা। সরকারের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে আশ্বাস দিলেও জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে কিছু বলেননি। সরকার যাতে বাকি দাবিগুলি নিয়েও কথা বলে, সেই কারণেই গণইস্তফার সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর।

মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা। এ ছাড়াও আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টেয় কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ পর্যন্ত মিছিল হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের ওই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই গণইস্তফার সিদ্ধান্ত সিনিয়র ডাক্তারদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement