যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
র্যাগিং রুখতে এ বার বিশেষ দল তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ কিমি এলাকার মধ্যে থাকবে এই দল। ক্যাম্পাস এবং হস্টেলে কোনও রকম অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে দ্রুত পদক্ষেপ করবে এই বিশেষ দল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। যা ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে নানা মহল। এর পরই র্যাগিং মোকাবিলায় পদক্ষেপ করল বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং রুখতে রয়েছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। কিন্তু তার পরও র্যাগিংয়ের কারণে ছাত্রমৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ওই কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবিও উঠেছে। যদিও পড়ুয়াদের একাংশ সিসি ক্যামেরা বসানোর বিরুদ্ধে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই খবর। বৈঠকে ছিলেন বিভাগীয় প্রধানরা। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। র্যাগিংয়ের মতো কোনও ঘটনা ঘটছে কি না, তা নিয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলবে কমিটি।
গত ৯ অগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে এক ছাত্র নীচে পড়ে যান বলে দাবি। পরের দিন ভোরে নদিয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। র্যাগিংয়ের কারণে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। থানায় দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ। তার পরই এই ঘটনায় প্রাক্তনী এবং পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এক জনকে ঘটনার রাতে হস্টেলে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা সকলেই পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। রবিবার ছাত্রমৃত্যুতে প্রথম ধৃত সৌরভ চৌধুরী দাবি করেছেন, র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। ওই ছাত্র ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। সৌরভের এ-ও অভিযোগ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিজেদের ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করতে এক এক জন এক এক রকম বয়ান দিচ্ছেন। ধৃতদের বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। সোমবার একটি পুতুল নিয়ে এসে হস্টেলে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন তদন্তকারীরা।