মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আবার যাদবপুরকাণ্ডে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এ বার সরাসরি তিনি দায়ী করলেন সিপিএমকে। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে যাদবপুর নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতাম। অথচ সিপিএমের ইউনিয়ন একটা ছেলেকে মেরে ফেলল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এরা জীবনে বদলাবে না। বছরের পর বছর রক্ত নিয়ে খেলেও এদের শান্তি নেই।’’
গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে মৃত্যু হয় এক প্রথম বর্ষের ছাত্রের। ঘটনার নেপথ্যে র্যাগিংয়ের তত্ত্ব উঠে আসে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে এখনও উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর তুঙ্গে উঠেছে। বিরোধীরা যখন এই ঘটনার দায় তৃণমূল সরকার এবং প্রশাসনের দিকে চাপাচ্ছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী দায়ী করলেন সিপিএমকে। এর আগেও যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে মমতার মন্তব্য ছিল, ‘‘যাদবপুরের ছেলেটিকে অত্যাচার করতে করতে মেরেছে। ওঁর বাবার সঙ্গে আমি ফোনে কথা বলেছি। ওঁর বাবা বলেছেন, বিচার চান। ওর বাবা ফোনে বলেছেন ও (মৃত পড়ুয়া) খুব কাঁদত। বলত, খুব অত্যাচার হচ্ছে। আমি যাব ঠিক করেছিলাম।’’ তার পরই মমতা বলেন, ‘‘ওটা আতঙ্কপুর হয়ে গেছে। আমি এতে মর্মাহত এবং দুঃখিত। আমি যাদবপুরে যেতে চাই না। কারণ, ওখানে পড়াশোনা ভাল হতে পারে। শুধু পড়াশোনায় ভাল হলে মানুষ হয় না। যদি বিবেক না থাকে।”
মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেন, “ছেলেটি একটি মাদুলি পরেছিল। ওটাও খোলানো হয়েছে। মানে ওদের জমিদারি! ওখানে পুলিশ ঢুকতে দেয় না। সিসিটিভি লাগাতে দেয় না। র্যাগিং হয় ছেলেমেয়েদের উপরে।’’
সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘অল ইন্ডিয়া ইমাম মোয়াজ্জেম স্যোশাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজ়েশন’-এর উদ্যোগে রাজ্যের ছোট বড় ইমাম সংগঠনগুলিকে একত্রিত করে একটি সমাবেশ করে। সেখান থেকে ইমাম, মোয়াজ্জেম এবং পুরোহিতদের ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু স্কলারশিপে বাংলা এক নম্বর। গত ১২ বছরে তিন কোটি ৬৩ লক্ষ সংখ্যালঘু স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ওবিসি-দের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কেন জানেন? এ রাজ্যে ৯৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ওবিসি-র মধ্যে পড়েন।’’ এ ছাড়া ‘শিক্ষাশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’— কোনও প্রকল্পেই হিন্দু-মুসলিমে কোনও ভেদাভেদ নেই বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।