(বাঁ দিকে) ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য পুতুল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র গত ৯ অগস্ট রাতে কী ভাবে হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন? ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে সেখানে হাজির হয়েছে ফরেন্সিক দল। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও সঙ্গে আছেন। ওই পুতুলের মাধ্যমেই সে দিনের ঘটনাপ্রবাহ নতুন করে সাজানো হচ্ছে। রহস্যের সমাধানসূত্র খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
এর আগে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য ধৃত ছাত্র সপ্তক কামিল্যাকে নিয়ে হস্টেলে গিয়েছিল পুলিশ। এ বার, পুতুলের মাধ্যমে পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের আকারের সেই পুতুল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ঢুকেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। পুতুলটি গাড়ি করে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে মানুষের মতো জামাকাপড়ও পরানো হয়েছে। এর আগে সপ্তককে হাঁটিয়েই হস্টেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
মেন হস্টেলের এ২ ব্লকের যে তিন তলার বারান্দা থেকে নদিয়ার ছাত্র পড়ে গিয়েছিলেন, সেখানে পুতুলটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। পুতুলটিকে উপর থেকে নীচে ফেলে দেখা হচ্ছে। পুলিশে ছয়লাপ হস্টেল চত্বর। আছেন লালবাজারের গোয়েন্দা এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
যাদবপুরের ওই ছাত্র কি বারান্দা থেকে কোনও কারণে পড়ে গিয়েছিলেন? না কি তিনি নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন? না কি কেউ বা কারা তাঁকে ঠেলে নীচে ফেলে দিয়েছিলেন? ঘটনার তিন রকম সম্ভাবনা উঠে এসেছে। এই তিন ক্ষেত্রে, যথাক্রমে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, আত্মহত্যা অথবা খুনের মামলা হবে। কী ঘটেছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় যাদবপুর। ওই ছাত্র বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে পরের দিন ভোরে মৃত্যু হয় ছাত্রটির। ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং বর্তমান ছাত্র মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। চলছে জেরা। পুলিশের দাবি, ধৃতদের প্রত্যেকেরই ঘটনার সঙ্গে যোগ রয়েছে।
যদিও আদালতে যাওয়ার পথে রবিবার পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে চিৎকার করে এক ধৃত ছাত্র জানান, তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। হস্টেলে কোনও র্যাগিংই হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। ওই ছাত্রের নাম সৌরভ চৌধুরী। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তাঁকেই প্রথম গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।