Man Beaten to Death in Bowbazar

বৌবাজারে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ধৃত ১৪ জনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ

বৌবাজারের উদয়ন হস্টেলে শুক্রবার এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ধৃত ১৪ জনকে শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ১৬:২৭
Share:

বৌবাজারের এই উদয়ন হস্টেলেই যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। — নিজস্ব চিত্র।

বৌবাজারের হস্টেলে যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ধৃত ১৪ জনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠাল আদালত। শনিবার তাঁদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। পুলিশের তরফে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়। আদালত জানিয়েছে, আপাতত আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে।

Advertisement

বৌবাজারের উদয়ন হস্টেলে শুক্রবার এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে, মোবাইল চুরির সন্দেহে ইরশাদ আলমকে মারধর করা হয়েছিল। হস্টেলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে সেখানকার আবাসিকেরা মারধর এবং হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ পৌঁছে যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল। কিন্তু সেখানে যুবকের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় শুক্রবারই হস্টেলের ১৪ জন আবাসিককে গ্রেফতার করেছিল মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তাঁদের শনিবার আদালতে হাজির করানো হয়।

আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবী জানান, পুলিশের কাছে মূল অভিযুক্তের নাম নেই। কারা যুবককে মারধর করেছেন, তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ, শুধু সন্দেহের বশে ১৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা সকলে মেধাবী ছাত্র বলেও আদালতে সওয়াল করেন তাঁদের আইনজীবী। বলা হয়, এই ছাত্রদের কারও খুন করার মানসিকতা ছিল না। তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে যেন জামিন মঞ্জুর করা হয়, আদালতে সেই আবেদন জানান অভিযুক্তদের আইনজীবী।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী পাল্টা সওয়ালে জানান, ধৃতেরা সকলে শিক্ষিত, বুদ্ধিমান। দেশগঠনের কাজে প্রতিভাকে ব্যবহার না করে তাঁরা ঘৃণ্য অপরাধ করেছেন। সম্মিলিত ভাবে এক জনকে অপহরণ করে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘যুবক যে দোকানে কর্মরত, সেখানকার মালিককে অপহরণের পর সাহায্যের জন্য ফোন করেছিলেন। টাকা নিয়ে আসতে বলেছিলেন। মালিক পুলিশকে খবর দেন। কিন্তু পুলিশ সেখানে পৌঁছনোর পরেও হস্টেলের দরজা বন্ধ ছিল। ভিতরে যুবককে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়। দু’ঘণ্টা পর নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত আছেন। অনেকে পালিয়ে গিয়েছেন। সকলের নাগাল পাওয়া দরকার।’’ তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে জানান সরকারি আইনজীবী। তিনি ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চান অভিযুক্তদের। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক ধৃতদের ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

ধৃতেরা হলেন ঝাড়গ্রামের উমুল হাঁসদা, বাঁকুড়ার পবিত্র মুর্মু, মুর্শিদাবাদের সুবীর টুডু, ঝাড়গ্রামের হিমাংশু মাণ্ডি, জলপাইগুড়ির মনোজ সরকার, নদিয়ার প্রদীপ দাস, মালদহের কার্তিক মণ্ডল, রাজেশ কর্মকার, দক্ষিণ দিনাজপুরের রানা হেমব্রম, পশ্চিম মেদিনীপুরের শুভঙ্কর মাণ্ডি, হুগলির প্রিয়ম মণ্ডল, নদিয়ার ঋতম হালদার, কোচবিহারের শঙ্কর বর্মন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দূত কুমার মণ্ডল।

বেলগাছিয়ার বাসিন্দা ৩৭ বছরের ইরশাদ চাঁদনি চক এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করতেন। তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। অভিযোগ, উদয়ন হস্টেলের সামনের রাস্তায় শুক্রবার সকালে তাঁকে ঘুরঘুর করতে দেখা গিয়েছিল। আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল চুরি গিয়েছিল। সেই থেকে ছাত্রদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা ফুটপথ থেকে টেনেহিঁচড়ে যুবককে ভিতরে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement