তৃণমূলের পতাকা হাতে বিক্ষোভ হকারদের। শনিবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার ধর্মতলায় নিউ মার্কেট চত্বরে হকারদের সঙ্গে স্থায়ী ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ। প্রতিবাদে এসএন ব্যানার্জি রোডে রাস্তা অবরোধ ব্যবসায়ীদের। পাল্টা তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ হকারদেরও। এর ফলে শুক্রবার বিকেলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ধর্মতলার একাংশ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয় পুলিশ। পুলিশের চেষ্টায় আপাতত অবরোধ তুলে নেন ব্যবসায়ীরা। অবরোধ তোলার পরেই ধর্মতলায় ট্র্যাফিক পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সকালে। নিউ মার্কেট চত্বরে স্থায়ী পার্কিংয়ে গাড়ি রাখতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রেহান খান নামের এক হকার নেতার বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিউ মার্কেট থানার ওসির নির্দেশেই তিনি এই কাজ করছেন বলে দাবি করেন ওই হকার নেতা। এর পরেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান স্থায়ী ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই সময় হকার নেতা সইফ খানের নেতৃত্বে একদল লোক ব্যবসায়ীদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
এর পরেই পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীদের একাংশ নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। থানা ঘেরাও করা হয়। তার পরেই ব্যবসায়ীরা এসে এসএন ব্যানার্জি রোডে রাস্তা অবরোধ করেন। এর ফলে ধর্মতলার একাংশ পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় যানজট। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। যত ক্ষণ না পর্যন্ত অভিযুক্ত হকারদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা রাস্তা অবরোধ চালিয়ে যাবেন।
শ্রীরাম আর্কেডের ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান জ্যাকি সম্পানি এই প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “আমাদের তুলে দিয়ে গোটা এলাকায় হকার বসিয়ে দিক। হকার নেতা বলছেন, ওসি আমাদের নির্দেশ দিয়েছে। তা হলে কি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়েও ওঁদের ক্ষমতা বেশি? আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।” পাল্টা হকার নেতা সইফ খানের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, স্থায়ী কাঠামো না থাকলে কোনও হকারকে উচ্ছেদ করা যাবে না। কিন্তু শনিবার সকালে আমাদের হকারদের বসতে বাধা দেন ব্যবসায়ীরা। আমরা ঝামেলা চাই না। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি মাত্র।”
এই বিষয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। একই সঙ্গে আর্জি জানানো হয়, কোনও পক্ষের অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, তা থানায় গিয়ে জানাতে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।