যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে রাত ১০টার পর আর কেউ ঢুকতে পারবেন না। যাঁরা বাইরে বেরোবেন, তাঁদেরও ওই সময়ের মধ্যেই হস্টেলে ঢুকে পড়তে হবে। ১০টার পর হস্টেলের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। টানা আট ঘণ্টা দরজা বন্ধ থাকবে। এমনটাই জানানো হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস্ বুধবার নতুন একটি নির্দেশিকা জারি করে হস্টেলের একগুচ্ছ নতুন নিয়ম জানিয়েছেন। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, হস্টেলের কোনও আবাসিক রাত ১০টার পর হস্টেলের বাইরে থাকতে পারবেন না। কোনও কারণে হস্টেলে থাকতে না পারলে আগে থেকে তাঁকে হস্টেল সুপারিনটেন্ডেন্টের অনুমতি নিতে হবে। হস্টেলে ভর্তির সময়েই একটি নিয়মের তালিকা প্রত্যেক ছাত্রকে দেওয়া হয়। তা মেনে চলতে হবে সকলকে।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, রাত ১০টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত হস্টেলের দরজা বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তারক্ষীকে কড়া ভাবে এই নিয়ম মানতে হবে।
হস্টেলের ছাত্রদের সঙ্গে বাইরে থেকে কেউ দেখা করতে এলে ছাত্রেরা আর তাঁদের ঘরে নিয়ে যেতে পারবেন না। হস্টেলের ‘ভিজিটর্স রুম’-এ গিয়ে দেখা করতে হবে। সেখানেই সময় কাটাতে পারবেন ছাত্রেরা। কোনও ক্ষেত্রে ‘ভিজিটর্স রুম’ না থাকলে হস্টেলের ‘টিভি-কাম-রিক্রিয়েশন রুম’ ব্যবহার করতে হবে। যাঁরা বাইরে থেকে দেখা করতে আসছেন, তাঁদের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। খাতায় লেখাতে হবে নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর। হস্টেলের আবাসিকদেরও এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ছাত্রদের সঙ্গে অতিথি হিসাবে থাকার যে রীতি প্রচলিত ছিল, সে সম্বন্ধে হস্টেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়নি। আগে অবশ্য মৌখিক ভাবে বলা হয়েছিল, যাঁরা আবাসিক নন, তাঁরা অতিথি হিসাবে থাকতে পারবেন না।
নির্দেশিকায় হস্টেলের সমস্ত আবাসিককে হস্টেলের বিশেষ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা যে কোনও সময় ওই পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারেন। এ ছাড়া, হস্টেলের কর্মীদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুরের এই মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে গিয়েছিলেন বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ছাত্র। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরের দিন ভোরে মৃত্যু হয়। অভিযোগ, হস্টেলে তিনি র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। হস্টেলের নিয়মে ঢিলেমি নিয়ে নানা মহলে নিন্দার মুখে পড়েছেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। তার মাঝে একগুচ্ছ নতুন নিয়ম চালু করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল।