Nava Nalanda School Incident

কাচ ভেঙে নব নালন্দা স্কুলে জখম দুই পড়ুয়া, মঙ্গলবার ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কর্তৃপক্ষ

স্কুলের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে বলেন, “এটি একটি দুর্ঘটনা। স্কুলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট নজর রাখি। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর দায়িত্ব আমার।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১০
Share:

(বাঁ দিকে) দুর্ঘটনার পর স্কুলে পুলিশ এবং অভিভাবকেরা। ভেঙে পড়ে রয়েছে জানলার কাচ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

কাচ ভেঙে দুই পড়ুয়া জখম হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। সোমবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউ এলাকার নব নালন্দা স্কুলের এই ঘটনায় অভিভাবকদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক ডাকলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে বলেন, “এটি একটি দুর্ঘটনা। স্কুলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট নজর রাখি। আগামী দিনেও রাখব। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর দায়িত্ব আমার। আপনারা কাল থেকে স্কুলে পাঠাতে পারেন বাচ্চাদের।”

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, কাচ ভেঙে পড়ে জখম হন নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া। এক পড়ুয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও অন্য পড়ুয়ার আঘাত গুরুতর ছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ওই পড়ুয়ার নাম প্রিয়ম দাস। তার মাথায় চোট লেগেছে। প্রায় ৪০টি সেলাই করতে হয়েছে। গুরুতর ভাবে জখম ওই পড়ুয়া আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

যে পড়ুয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়, তার নাম সৃঞ্জয় রায়। ওই পড়ুয়ার মা বর্ণালী রায় বলেন, “প্রতি দিনের মতো ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ এক অভিভাবক ফোন করে বললেন যে, ছেলের গায়ে কাচ ভেঙে পড়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েই ক্লাসে পাঠিয়ে দেন। পরে থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।”

Advertisement

ঘটনার দায় নিয়ে প্রিন্সিপাল বলেন, চার তলার ৫০৩ নম্বর রুমে জানলাটি বন্ধ থাকে। আজ এক জন পড়ুয়া সেই জানলাটি খোলে। সেই সময় কাচ ভেঙে পড়ে। সেই সময় নীচে অষ্টম এবং নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রার্থনা চলছিল।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। মঙ্গলবার থেকে ক্লাস স্বাভাবিক ভাবেই হবে। যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, ওই জায়গায় নেট লাগাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে কোন‌ও বিপদ না ঘটে। "

স্কুলের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, স্কুলের নিজস্ব দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স আছে। রয়েছেন দু’জন চালক। সকালে দুর্ঘটনার সময় যে চালকের উপস্থিত থাকার কথা ছিল, অসুস্থতার জন্য তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অন্য চালককে ডেকে পাঠানো হয়। অভিযোগ, তিনি আসতে দেরি করায় জখম পড়ুয়াকে ট্যাক্সি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তার পরেই দেরি করে আসার জন্য চালককে শো-কজ় করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের বক্তব্য, স্কুলে ক্লাস চালু হয় সকাল ৭টা ১৫ থেকে। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা পাওয়া যায় ৮টা থেকে। এর মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কী হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকেরা।

সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ সার্দান অ্যাভিনিউ এলাকার ওই স্কুলে ঢুকছিল পড়ুয়ারা। প্রার্থনা শুরু হওয়ার ঠিক আগে স্কুল ভবনের উপর থেকে কাচ ভেঙে পড়ে পড়ুয়াদের উপরে। দৌড়ে আসে অন্য পড়ুয়ারা। ওই পড়ুয়াদের উদ্ধার করতে এগিয়ে যান পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দিতে আসা অভিভাবকেরাও। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অভিভাবকেরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ভবনটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। তাই রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি, এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, কয়েক জন পড়ুয়া জোরে জানলা খুলতে যাওয়ায় কাচ ভেঙে নীচে পড়ে। যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি অভিভাবকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement