এসএসকেএম চত্বরে জমা করা হচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বাতিল হওয়া ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট’ স্যালাইনের বাক্স । —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতিদের নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই আবহে রাজ্যের হাসপাতালগুলিকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতর। জানানো হয়েছে, সুরক্ষার কারণে একটি নির্দিষ্ট সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। তার পরই দেখা গেল কলকাতার এসএসকেএমের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রিঙ্গার ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইন বাতিল করে মেডিসিন ওয়ার্ডের সামনে জড়ো করার কাজ শুরু হল।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া আরএল স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতর কড়া নির্দেশিকা জারি করে। জানিয়ে দেওয়া হয়, যে সংস্থার তৈরি স্যালাইন আতশকাচের নীচে রয়েছে, তাদের তৈরি সব স্যালাইন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কোনও সংস্থার নাম উল্লেখ করা না হলেও সন্দেহের তির ছিল পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার আরএল স্যালাইনের দিকেই। বিভিন্ন হাসপাতাল নিজের মতো করে ‘নিষিদ্ধ’ স্যালাইনের তালিকা তৈরি করে। এসএসকেএম হাসপাতালের তরফেও একটি তালিকা তৈরি করা হয়। কোন ওয়ার্ডে ওই স্যালাইন কত পরিমাণ রয়েছে, তা উল্লেখ ছিল তালিকায়।
সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বাতিল হওয়া স্যালাইন বার করে আনার কাজ শুরু হয়েছে। শুধু মহিলা এবং শিশু বিভাগ থেকেই নয়, অন্যান্য ওয়ার্ড থেকেও স্যালাইন বার করে আনার কাজ চলছে। হাসপাতালের কর্মীরা জানাচ্ছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এই কাজ করা হচ্ছে।
আরএল স্যালাইনকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক। অভিযোগ, এই স্যালাইন আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে তার পরও কী ভাবে তা ব্যবহার করা হল প্রসূতিদের শরীরে? এই স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ থেকেই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি তো? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যে একটি ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে তদন্ত করেছে। বেশ কিছু স্যালাইন এবং ওষুধ বাজেয়াপ্ত করে নমুনার জন্য সংগ্রহও করা হয়।
অন্য দিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যালের অসুস্থ তিন প্রসূতিকে রবিবার রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে সিসিইউতে এবং এক জনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁদের। পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা করা হচ্ছে তিন প্রসূতির।