(বাঁ দিকে) পিভি অনওয়ারকে তৃণমূলে স্বাগত জানচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গত শুক্রবার কলকাতায়। ছবি: সমাজমাধ্যম।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তিন দিনের মধ্যেই পদত্যাগ করলেন কেরলের নির্দল বিধায়ক পিভি অনওয়ার। সোমবার সকালে কেরল বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাপত্র তুলে দেন তিনি। অনওয়ার জানিয়েছেন, তিনি যে কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন, সেই নিলাম্বুর বিধানসভার উপনির্বাচনে আর দাঁড়াতে চান না। ওই কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি ভিএস জয়ের নাম প্রস্তাব করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থীকে তিনি নিঃশর্তে সমর্থন জানাবেন।
তৃণমূলে যোগ দেওয়া নির্দল বিধায়কের কংগ্রেস প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করার ঘটনাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। প্রসঙ্গত, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে কেরলে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ-এ যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অনওয়ার। কিন্তু হাত শিবির তাঁর জন্য দরজা খোলেনি। কেরলে বামেদের নেতৃত্বাধীন জোট এলডিএফ-এর সমর্থনে ভোটে জিতলেও পিনারাই বিজয়ন সরকারের বন-বিলের বিরোধিতা করেন তিনি। বাম নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়।
তার পর ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট অফ কেরল (ডিএমকে) নামে নতুন দল খুলেছিলেন অনওয়ার। যোগাযোগ করেছিলেন মুসলিম লিগের সঙ্গেও। কিন্তু শেষমেশ তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় থেকেও তৃণমূল যখন কংগ্রেসের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বজায় রাখার কৌশল নিচ্ছে, তখন সেই দলের নেতারই কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করার ঘোষণাকে অর্থবহ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিয়েই পদপ্রাপ্তি হয়েছে অনওয়ারের। তাঁকে কেরলে দলের আহ্বায়ক করেছে তৃণমূল।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইস্তফা দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে অনওয়ার জানিয়েছেন, তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। তবে কেরলের রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের অভিমত, ইস্তফা না-দিলে দলত্যাগবিরোধী আইনে বিধায়ক পদ হারাতেন অনওয়ার। কারণ নির্দল বিধায়ক হলেও এলডিএফ-এর সমর্থনে এবং প্রতীকে জিতেছিলেন তিনি। নির্দল প্রার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট প্রতীক নিয়ে জেতেননি। তা ছাড়া অন্য দলে যোগ দেওয়ার কারণে অনওয়ারের উপর দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরেও আর কোনও বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন বামশাসিত কেরলের বিধানসভার স্পিকার। ক্রমশ বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো অনওয়ার সেই ঝুঁকি নিতে চাননি বলেই একাংশের অভিমত। সোমবার বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে অনওয়ার বলেন, “আমি পিনারাই (বিজয়ন) আমলের শেষ দেখতে চাই। আজ থেকে তাঁর সূচনা হল।”