উদ্ধার হওয়া সোনা। নিজস্ব চিত্র
কলকাতায় বসে সোনা পাচার হচ্ছিল মুম্বইয়ে।
বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে সোনা এসে পৌঁছচ্ছিল কলকাতায়। এখান থেকে ট্রেনে মুম্বই। সেই কারণে মুম্বই থেকে কয়েক জন যুবক কলকাতায় এসে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল।
সম্প্রতি কলকাতায় এমনই এক চক্রের হদিস পেয়েছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত যে সাত জনকে শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের পাঁচ জনই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা।
শনিবার তাদের গ্রেফতার করার পরে জানা যায়, দুই যুবক চোরাই সোনা নিয়ে ট্রেনে মুম্বই রওনা হয়েছে। এক জন প্রায় মুম্বই পৌঁছনোর মুখে। অন্য জন মাঝরাস্তায়। কলকাতা থেকে মুম্বই এবং ইনদওর-এর ডিআরআই অফিসারদের সতর্ক করা হয়। শেষে মুম্বই এবং রায়পুর থেকে চোরাই সোনা সমেত গ্রেফতার করা হয় ওই দুই যুবককে। এমনকি মুম্বইয়ে যে ব্যক্তির কাছে ওই সোনা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল, সেই সলিল জৈনকেও ধরেছে মুম্বই ডিআরআই। মুম্বই ও ইনদওরে পৃথক পৃথক মামলা শুরু করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪২ কিলোগ্রাম সোনা, যার বাজারদর সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। পাওয়া গিয়েছে প্রায় ৫০০ গ্রাম সোনার গয়নাও।
ডিআরআই জানাচ্ছে, কলকাতার সিঁথির কাছে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চোরাই সোনার কারবার চলছে বলে প্রথমে খবর পাওয়া যায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে গোবিন্দ মালব্য নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করে ধরা হয় সিঁথিরই বাসিন্দা ফিরোজ মোল্লাকে। গোবিন্দ ও ফিরোজের বাড়ি এবং ফিরোজের অফিস থেকে প্রথমেই উদ্ধার হয় ২৬ কেজি ৬৫০ গ্রাম চোরাই সোনা এবং ৫০০ গ্রাম সোনার গয়না।
গোবিন্দ ও ফিরোজকে জেরা করে একে একে ধরা পড়ে আন্না রাম, মহিন্দর কুমার, সুরজ মকবুল মোল্লা, কৈলাস জগতাপ এবং বিশাল অঙ্কুশ মানে। ধৃত এই সাত জনের মধ্যে ফিরোজ ও সুরজ ছাড়া বাকিরা মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা বলে ডিআরআই জানিয়েছে। যে সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা সবই বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে ভারতে ঢুকেছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশ থেকে এই সোনা কলকাতায় এনে এখান থেকে তা মুম্বই পাঠানোর জন্যই গোবিন্দরা মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন। সিঁথির ওই বাড়ি থেকেই ধরা হয়েছে গোবিন্দ, আন্না এবং মহিন্দরকে।
ডিআরআই জানিয়েছে, মুম্বইয়ের পথে মোট ১৫ কিলোগ্রাম সোনা-সহ যে দু’জনকে ধরা হয়েছে, তারা হল গোপারাম ও মিলন কুমার। তাদের বাড়িও মহারাষ্ট্রে। কলকাতায় ধৃত সাত জনকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।