সোমবার কলকাতা পুলিশের অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। — নিজস্ব চিত্র।
১৬৩ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি চলছে। তা নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন বলে জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সোমবার পুজো উপলক্ষে কলকাতা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। সিপি বলেন, ‘‘পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’
শনিবার রাত থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন চলছে ধর্মতলায়। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচার এবং হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা-সহ ১০ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন সাত জন জুনিয়র ডাক্তার। প্রথমে ছ’জন অনশন শুরু করেছিলেন। রবিবার যোগ দেন আরজি করের অনিকেত মাহাতোও। অনশন কর্মসূচিতে এখনও সরকারের সাড়া মেলেনি। তাকে কেন্দ্র করে ধর্মতলা চত্বরে সাধারণ মানুষের জমায়েতও হচ্ছে। জুনিয়রদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাতে সোমবার সকালে ২৪ ঘণ্টার জন্য অনশনে যোগ দিয়েছেন কয়েক জন সিনিয়র ডাক্তারও।
কলকাতা পুলিশই ধর্মতলা চত্বরে নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬৩ ধারা জারি করেছে। তার পরেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি চলছে। অনশনের জন্য ডাক্তারেরা লালবাজারের অনুমতি চেয়ে ইমেল করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। লালবাজার থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ধর্মতলায় পুজোর মুখে ভিড় বেশি রয়েছে। প্রতি দিনই পুজোর কেনাকাটার জন্য বহু মানুষ ভিড় করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে যাওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তারেরা মেট্রো চ্যানেলের সামনে অবস্থানে বসলে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে, জানিয়েছিল পুলিশ। তবে অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও অনশন শুরু করেছেন ডাক্তারেরা। সোমবার সেই অনশনের তৃতীয় দিন।
সিপিকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘আপনারাই তো ধর্মতলায় ১৬৩ ধারা জারি করেছেন। তার পরেও সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন চলছে। পুলিশ কী করবে?’’ জবাবে সিপি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করবে পুলিশ, তা সিপি স্পষ্ট করেননি। এ বিষয়ে বেশি কথা বলেও চাননি তিনি।
শহরের কিছু বয়স্ক নাগরিক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়ে সোমবার কলকাতা পুলিশ ‘পুজো দর্শন’ নামক কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। শিশু এবং বৃদ্ধদের নিয়ে কলকাতার কিছু বড় পুজো দেখানোই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য। সে প্রসঙ্গে সিপি বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ অনেক দিন ধরেই এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত। আমাদের ২২ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছেন, যাঁরা পুজোয় ইচ্ছা মতো ঘুরতে, বেরোতে পারেন না। সারা বছরই পুলিশ ওঁদের খোঁজ রাখে। এ বছর কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন চার হাজারের বেশি বয়স্ক নাগরিক এবং দু’হাজারের বেশি বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশু। ২২টি বাসে করে ঘোরানো হচ্ছে। সকলের খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্তও করা হয়েছে।’’