মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
অমিত শাহ বারবার বলেছেন বাংলায় ২০০-র বেশি আসন পাবে বিজেপি। এ বার অমিতের বাংলা সফরের দিনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, তৃণমূল ২২১ এর বেশি আসনে জিতবে। এ টুকুই নয়, নন্দীগ্রাম থেকে অমিতকে তাঁর বিরুদ্ধে লড়ার আহ্বানও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠীর আলোচনাচক্রে গিয়েই এই চ্যালেঞ্জ ছোড়েন মমতা।
তৃণমূলনেত্রী পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন ঘোষণার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়ে যায়। একদা নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহর হাত ধরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরেই এই ঘোষণা করেন মমতা। জানান, তিনি একই সঙ্গে নন্দীগ্রাম ও ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হতে চান। বৃহস্পতিবার রাজ্য সফরে এসে মমতার সেই ইচ্ছাকে কটাক্ষ করেন অমিত। কোচবিহারের জনসভা থেকে বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমি বলেছিলাম, উনিশের ভোটে আমরা ২০টা আসন পাব। দিদি বলেছিলেন, ‘আমরা আন্ডা পাব।’ কিন্তু আমরা আন্ডা পাইনি। বাংলার মানুষ আমাদের ১৮টি আসন দিয়েছেন। আর দিদি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই এখন সিট খুঁজছেন। একটা আসনে দাঁড়ানোর সাহস না করে দু’টো আসনে দাঁড়াতে চাইছেন।’’
কোচবিহারে এমন আক্রমণ করার পরে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর হয়ে অমিত যখন কলকাতায় পা রেখেছেন, তখনই অমিতকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা। বললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে আমার বিরুদ্ধে ভোটে লড়ুন উনি।’’ মমতা নন্দীগ্রামে প্রার্থী হতে চান বলার পর বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব আক্রমণ শুরু করে। ঘোষণার দিনই শুভেন্দু কলকাতায় একটি জনসভা থেকে জানান, নন্দীগ্রামে দল যাঁকেই প্রার্থী করুক, মুখ্যমন্ত্রীকে ‘হাফ লাখ’ ভোটে হারাতে না পারলে তিনি রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন। এর পর প্রতিদিনই কোনও না কোনও সভায় এই আক্রমণ করে চলেছেন শুভেন্দু। পুরুলিয়ায় শুভেন্দু এমনও বলেন, ‘‘কোনও বিখ্যাত প্রার্থীর দরকার নেই, নন্দীগ্রামে মমতাকে হারাতে ধর্ষিতা রমণী রাধারানি আড়িই যথেষ্ট।’’ এত আক্রমণেও কোনও জবাব দেননি মমতা। এ বার জবাব দিলেন সেই আক্রমণ অমিতের গলায় শোনার অব্যবহিত পরেই।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে তিনি আলাদা করে দেখছেন না বলেও বৃহস্পতিবার দাবি করেন মমতা। বলেন, ‘‘আলাদা কিছু নয়। যাঁর লড়াই করার সাহস আছে, সে কখনও ভয় পায় না।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘আমি ‘স্ট্রিটফাইটার’, প্রতিদিন রাস্তায় নেমে লড়াই করি। নির্বাচন একটা রুটিন ব্যাপার।’’