দেহ আটকে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার রাতে, পিলখানায়। নিজস্ব চিত্র
লোহা বোঝাই লরির ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হাওড়ার গোলাবাড়ির পিলখানা এলাকা। প্রায় চার ঘণ্টা দেহ আটকে ভোর পর্যন্ত জি টি রোড অবরোধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। লরিটিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরানোরও চেষ্টা হয়। খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন ছুটে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ নামালে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। শেষমেশ পদস্থ পুলিশকর্তাদের হস্তক্ষেপে ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ অবরোধ ওঠে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পিলখানা সেকেন্ড লেনের বাসিন্দা মহম্মদ নাজ (২৫) জি টি রোডে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আসছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় রাস্তায় লোকজন থাকেন, গল্পগুজব করেন। পুলিশ জানায়, রাস্তার ধার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন নাজ। সেই সময়ে লরিটি তাঁকে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এর পরেই লরি ফেলে পালায় চালক ও খালাসি।
এ দিকে, চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। তাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। লরিটি ভাঙচুর করে আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়। খবর পেয়ে আসে পুলিশ ও দমকল। পুলিশ দেখে নাজের দেহ আটকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, নাজই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ বাবা এবং ক্যানসার আক্রান্ত মা। তাই ওই পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
মহম্মদ সিরাজুদ্দিন নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘রাতে পুলিশ না থাকায় এর আগেও কয়েকটি এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। বার বার প্রশাসনকে বলা সত্ত্বেও এখানে স্পিড ব্রেকার তৈরি করা হয়নি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে।’’ ভোর পর্যন্ত অবরোধ-বিক্ষোভ চলার পরে পদস্থ পুলিশকর্তারা ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। তার পরে অবরোধ ওঠে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি স্থানীয়দের দাবিও খতিয়ে দেখা হবে। লরির চালক ও খালাসির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’