ভুয়ো নথি দিয়ে পাসপোর্ট বানানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার। — প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো নথি জমা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সম্প্রতি এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ভুয়ো পরিচয়পত্রও। এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও এই রাজ্যে ভুয়ো নথি দিয়ে পাসপোর্ট বানানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার।
অতীতের এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আবেদনকারীর ঠিকানায় গিয়ে পাসপোর্টের পুলিশি যাচাই খতিয়ে দেখে তা চূড়ান্ত করার জন্য পাসপোর্ট অফিসারদের নির্দেশ দিল লালবাজার। একই সঙ্গে, পাসপোর্টের আবেদনকারীর সমস্ত নথি নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হবে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে। যাতে গ্রাহকের ঠিকানার সঙ্গে আপলোড করা নথির দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশের ফারাক না থাকে। বুধবার এই মর্মে লালবাজারের তরফে সব থানা এবং সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকেই।
এক পুলিশকর্তা জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কোনও রকম পুলিশি যাচাই ছাড়াই ধৃত বাংলাদেশি ওই ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করেছিল। তাই এখন থেকে পাসপোর্ট অফিসারকে আবেদনকারীর ঠিকানায় হাজির হয়ে সব খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতিটি থানায় এক জন করে পাসপোর্ট অফিসার রয়েছেন। এর পাশাপাশি সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশনের তরফে পাসপোর্ট অফিসারও পুলিশি যাচাইয়ের কাজ করে থাকেন। মূলত দুই তরফে ভাগ করে এই কাজ হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠছিল, পুলিশ আবেদনকারীর ঠিকানায় না গিয়েই ছাড়পত্র দিয়ে দিচ্ছে। ফলে, ভুয়ো নথিতে পাসপোর্ট তৈরি হয়ে তা পৌঁছে যাচ্ছে জঙ্গি থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে।
লালবাজার জানিয়েছে, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছিল, পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে আবেদনকারীকে থানায় ডেকে এনে তাঁর নথি যাচাই করা হচ্ছে কিংবা প্রয়োজনীয় নথি থানা থেকেই আপলোড করা হচ্ছে পাসপোর্টের পোর্টালে। এর ফলে আবেদনকারীর ঠিকানায় গিয়ে নথি যাচাই করা হচ্ছে না। কিছু পাসপোর্ট অফিসার ফাঁকি দিয়ে ওই কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ। এই প্রবণতা আটকাতে এ বার আবেদনকারীর বাড়ির ঠিকানার সঙ্গে আপলোড করা নথির দ্রাঘিমাংশ এবং অক্ষাংশ মিলিয়ে দেখতে চাইছেন পুলিশকর্তারা। তাই গ্রাহকের বাড়ির ঠিকানায় সশরীরে হাজির হয়ে ওই দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশ মিলিয়ে নথি আপলোড করতে বলা হয়েছে পাসপোর্ট অফিসারদের। পুলিশের একটি অংশের দাবি, এতে গোটা প্রক্রিয়ায় যেমন স্বচ্ছতা আসবে, তেমনই ভুয়ো নথি জমা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করাও বন্ধ করা যাবে।