গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া সেই বহুতলের সামনে উদ্ধারকারীরা। —ফাইল চিত্র।
গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছিল, কী ভাবে অবৈধ নির্মাণে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে? এ বার এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসই)-কে চিঠি পাঠাল কলকাতা পুরসভা। বেআইনি নির্মাণে কোনও ভাবেই যেন বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হয়, সে বিষয়ে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈন। একই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে আইজিআর-সিএসআর বিভাগকেও।
কলকাতা হাইকোর্ট একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বেআইনি নির্মাণে মিউটেশন, অ্যাসেসমেন্ট (সম্পত্তি কর ও রাজস্ব আদায়) কী ভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে পুরসভাকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেয়। গত ৮ এপ্রিল বিল্ডিং বিভাগের সমস্ত ইঞ্জিনিয়ার ও পুর কমিশনারকে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানে তিনি পুর কমিশনারকে বেআইনি বিল্ডিংয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং রেজিস্ট্রেশন যেন না দেওয়া হয়, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পরেই সিইএসসির সঙ্গে ও আইজিআর-সিএসআরকে চিঠি পাঠিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। দু’টি চিঠিতেই পুরসভার এক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার (বিল্ডিং)-এর মোবাইল নম্বরও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’পক্ষ কোনও বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে, তা তারা সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে জানাবে। জানা মাত্রই ওই ইঞ্জিনিয়ার বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ রুখতে যাবতীয় ফাঁকফোকর বন্ধ করতে আমরা উদ্যোগ শুরু করেছি। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গেলে যেন বেসরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা বিল্ডিং প্ল্যান খতিয়ে দেখে, সেই আবেদন জানানো হয়েছে। যদি বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়, তা হলেই বহুলাংশে বেআইনি নির্মাণের প্রবণতা কমবে। সেই ভাবনা থেকেই কলকাতা পুরসভার তরফে পুর কমিশনার সিইএসসিকে চিঠি দিয়েছেন।’’
কোনও বাড়ি, আবাসন কিংবা কোনও দোকানের ‘ডিড’ রেজিস্ট্রেশন করার আগেও যেন বিল্ডিং প্ল্যান দেখে নেন আইজিআর-সিএসআর কর্তৃপক্ষ, সেই বিষয়েও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পুরসভা যাবতীয় তথ্য তাদের জানাবে। ২০২০ সালে মেয়র পরিষদের একটি বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তখন চিঠি পাঠানো হয়েছিল কি না, তার কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না কলকাতা পুরসভায়। তাই নতুন করে ওই দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছে।