কামানের ইতিহাস জানতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ প্রশাসন

রবীন্দ্র সরোবরের মতো জাতীয় সরোবরের বিষয়ে জানা ছাড়াও সেখানে কী কী দ্রষ্টব্য রয়েছে, তা জানতে আগ্রহী হয়ে নাগরিকদের একাংশ আধিকারিকদের জানিয়েছিলেন।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪০
Share:

ঐতিহাসিক: রবীন্দ্র সরোবরে রাখা কামান। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

কামান কার?

Advertisement

তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল। জট কাটাতে এ বার কামান বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হলেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।

রবীন্দ্র সরোবরের মতো জাতীয় সরোবরের বিষয়ে জানা ছাড়াও সেখানে কী কী দ্রষ্টব্য রয়েছে, তা জানতে আগ্রহী হয়ে নাগরিকদের একাংশ আধিকারিকদের জানিয়েছিলেন। এর পরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরোবরের গায়ে একটি বোর্ডে সেখানকার যাবতীয় তথ্য লিখে রাখবেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে রবীন্দ্র সরোবরে পাওয়া কামানের মালিকানা নিয়ে।

Advertisement

কেএমডিএ-র এক আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘গত কুড়ির দশকে রবীন্দ্র সরোবর তৈরির সময়ে মাটি খুঁড়তে গিয়ে ছ’টি কামান পাওয়া যায়। সেগুলি সেখানেই পড়েছিল। পরবর্তীকালে সরোবর চত্বরের মধ্যেই ওই কামানগুলিকে সাজিয়ে রেখে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, ওই কামানগুলির মালিকানা নিয়ে বহু দিন ধরেই ধোঁয়াশা রয়েছে। সরকারি কোনও দফতর থেকেও ওই কামানের মালিকানা দাবি করা হয়নি। সেই কারণেই শেষমেশ কামানের ইতিহাস জানতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ

হচ্ছে প্রশাসন।

কেএমডিএ সূত্রের খবর, সরোবরের মাটি খোঁড়ার সময়ে ইতস্তত ওই কামানগুলিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কামানগুলি এতটাই ভারী যে সেগুলি সরানো যায়নি। সরকারি কোনও দফতরই ওই কামানগুলি সংগ্রহ করে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ করেনি। পরবর্তীকালে যখন সরোবরের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তখন কামানগুলিকে সরোবর চত্বরে দু’টি জায়গায় বেদী তৈরি করে রাখা হয়। ফলকে লেখা রয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে ওই কামান পাওয়া গিয়েছিল।

কামান এবং বন্দুক বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারপুন জানান, কলকাতা শহরে এখনও পর্যন্ত যে ধরনের কামান দেখা গিয়েছে সেগুলি মূলত ব্রিটিশ কামান। ওই কামানগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল পলাশীর যুদ্ধের দু’-এক বছর আগে বা পরে। তাঁর মতে, সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণের সময়ে ইংরেজদের যে প্রতিরক্ষার ছবি পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকে জানা যায় শহরের তিনটি জায়গায় কামান রাখার জায়গা ছিল। সেগুলি হল শহরের দক্ষিণে রাজভবনের কাছাকাছি এলাকা, উত্তরে চিৎপুর এলাকা এবং পূর্বে বর্তমান চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সংলগ্ন এলাকা। সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ ছাড়াও আরও কিছু দিন পরে ইংরেজরা কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করে। ওই দু’টি যুদ্ধ ছাড়া কলকাতায় আর বড় কোনও যুদ্ধ হয়নি। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে পাওয়া কামান সম্ভবত টিপু সুলতানের বংশধরদেরই। যাঁরা এখানে এসে সরোবরের আশপাশে বসবাস শুরু করেন। তবে সেই ব্যাপারে পরীক্ষার পরেই

নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement