কড়া: হাওড়ার জে এন মুখার্জি রোডে পড়ে আবর্জনা। এ ভাবে যত্রতত্র জঞ্জাল ফেললে জরিমানা করবে হাওড়া পুর প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র
দিনে ১০০ কেজির বেশি বর্জ্য তৈরি হয়, এমন সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের থেকে এ বার বর্জ্য অপসারণের জন্য ফি নেবে হাওড়া পুরসভা। এই সংস্থার মধ্যে ধরা হয়েছে বড় হোটেল, অনুষ্ঠান বাড়ি, বড় শপিং মল, বাজার, বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-সহ ৮০ বা তার বেশি সংখ্যক ফ্ল্যাট বিশিষ্ট আবাসনগুলিকে। পুরসভা জানিয়েছে, এমন ৩০০টি সংস্থাকে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, তারা এলাকার ভ্যাটে বা রাস্তায় আবর্জনা ফেলতে পারবে না। অন্যথায় দেড় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
২০১৬ সালের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্জ্য অপসারণে নিজস্ব আইন তৈরি করেছেন হাওড়া পুর কর্তৃপক্ষ। অগস্ট মাসে তাতে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী। ওই আইন অনুযায়ী, আগামী দিনে বাড়ি থেকেই বর্জ্য সংগ্রহ করবে পুরসভা। বাড়ির বাইরে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা যাবে না। ফেললে জরিমানা হবে। পাশাপাশি, হাওড়া পুর এলাকার বাসিন্দারের এখন থেকে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করে দিতে তুলে হবে পুরকর্মীদের হাতে।
আবর্জনার উৎস অনুযায়ী পুর এলাকাকে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, বিভিন্ন গৃহস্থ বাড়িতে তৈরি হওয়া আবর্জনা এবং দ্বিতীয়ত, হোটেল-শপিং মল-বাজার প্রমুখ জায়গায় উৎপন্ন বর্জ্য। পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “ভবিষ্যতে এই সব প্রতিষ্ঠান তাদের বর্জ্য পচনশীল ও অপচনশীল— এই দু’টি ভাগে ভাগ করে নিজেদের চত্বরে জমা করবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুরসভা নির্ধারিত সংস্থা সেই বর্জ্য তুলে নিয়ে যাবে। এর জন্য কিছুটা ব্যয়ভার বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। তার পরিমাণ নির্ধারণ করবে পুরসভা। এ ছাড়াও ওই সংস্থা চাইলে সেই বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করতে পারবে। তার জন্য পুরসভা প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।’’
পুর কমিশনার জানান, প্রথমে গেজেট বিজ্ঞপ্তি বার করে জনসাধারণকে গোটা বিষয়টি জানানো হবে। পরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আলাদা ভাবে নোটিস দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট দিন থেকে শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই মধ্য হাওড়ার একটি বড় আবাসন কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করেছে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন জিরো ওয়েস্ট’।
কমিশনারের কথায়, ‘‘হাওড়া শহরে প্রতি দিন গড়ে ৬০০-৭০০ মেট্রিক টন বর্জ্য তৈরি হয়। ওই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য বেশি দিন ফেলা যাবে না বেলগাছিয়া ভাগাড়ে। পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য পৃথক করে শুধুমাত্র পচনশীল আবর্জনা পাঠানো হবে ভাগাড়ে। অন্য দিকে, প্রায় ৩৫ শতাংশ অপচনশীল আবর্জনা পাঠিয়ে দেওয়া হবে পুনর্ব্যবহারের জন্য। এর ফলে রোজ গড়ে ২৫০ মেট্রিক টন আবর্জনা কম পাঠাতে হবে ভাগাড়ে।’’