Assam Coal Mine

জলে ভেসে গিয়েছে অবৈধ খনি, অসমে আটকে ৯ শ্রমিক! উদ্ধার অভিযানে নামানো হল সেনাকে

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা খনিতে আটকে পড়া ৯ জন শ্রমিকের নামের তালিকা প্রকাশ করেন। ওই তালিকায় রয়েছেন জলপাইগুড়ির এক বাসিন্দাও। তাঁর নাম সঞ্জিত সরকার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০২
Share:

অসমের এই খনিতেই আটকে রয়েছেন শ্রমিকেরা। ছবি: সংগৃহীত।

অবৈধ খনিতে কয়লার সন্ধানে নেমেছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎই সেখানে হু- হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। অসমের দিমা হাসাও জেলার প্রত্যন্ত শিল্পশহর উমরাংসোর সেই খনিতেই আটকে রয়েছেন ন’জন শ্রমিক। প্রথমে আটকে পড়া শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ২০ বলে জানানো হয়েছিল। পরে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ন’জন শ্রমিকের নামের তালিকা প্রকাশ করেন। ওই তালিকায় রয়েছেন জলপাইগুড়ির এক বাসিন্দাও। তাঁর নাম সঞ্জিত সরকার। এক শ্রমিক নেপালের বাসিন্দা। আর বাকি সাত জন অসমের।

Advertisement

উদ্ধারকাজের প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় সোমবারই সেনাবাহিনীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিল অসম সরকার। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সেনা। এলাকায় পৌঁছেছে জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলও।

দিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক সীমান্ত কুমার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে সেনা। আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে দ্রুত পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, শ্রমিকেরা প্রায় ৩০০ মিটার নীচে আটকে রয়েছেন। খনি থেকে জল বার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ যন্ত্র। নামানো হচ্ছে দক্ষ সাঁতারুদেরও।

Advertisement

সকাল সাড়়ে ৬টা নাগাদ খনিমুখে পৌঁছয় অসম রাইফেলসের ‘পাথফাইন্ডার ইউনিট’। উদ্ধারকাজে সম্ভাব্য জটিলতার কথা মাথায় রেখে খবর দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর ‘ইঞ্জিনিয়ার টাস্ক ফোর্স’কে। সেনার তরফেও দক্ষ সাঁতারুদের মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। উদ্ধার করার পর শ্রমিকদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে রাখা হয়েছে হেলিকপ্টারও।

শ্রমিকেরা অবৈধ এই ‘ইঁদুর-গর্ত’ বা ‘র‌্যাট হোল মাইন’-এ নামার কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। কী এই ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’? কেনই বা তা নিষিদ্ধ? নাম শুনে আন্দাজ করা যায়, ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খোঁড়ার সঙ্গে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’-এর সম্পর্ক রয়েছে। এক কালে খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। শাবল-গাঁইতি দিয়ে খুব সঙ্কীর্ণ গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে এগোতে হত শ্রমিকদের। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এই ভাবে খোঁড়া সুড়ঙ্গ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হয়। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। ২০১৮ সালে মেঘালয়ের এমনই এক অবাধ কয়লাখনিতে জল ঢুকে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫ জন শ্রমিকের। অনেক খোঁজাখুজির পর মাত্র দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। বাকিদের দেহও মেলেনি। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য এই নিষিদ্ধ পদ্ধতিরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল প্রশাসনকে। সম্প্রতি রাজস্থানে কুয়োয় পড়ে যাওয়া তিন বছরের শিশুকে উদ্ধারেও শেষ পর্যন্ত সেই ইঁদুর-গর্ত খননকারীদেরই শরণ নিতে হয়! যদিও ওই শিশুকে বাঁচানো যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement