প্রতীকী ছবি।
দু’দিন পরে ছিল চার বছরের বিবাহবার্ষিকী। তার আগেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক গৃহবধূর। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তপসিয়া থানার আসগর মিস্ত্রি লেনে। মৃতার নাম দুর্গি রাউথ (২৩)। তাঁর দাদা রবি রাউথের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতার স্বামী সানি রাউথকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার তাকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।
সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, তাঁর বোনকে পণের জন্য খুন করা হয়েছে বলে সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন দাদা রবি। সেই অভিযোগ পেয়েই বুধবার রাতে এন্টালির ছাতুবাবু লেনের বাড়ি থেকে সানিকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্গি এবং সানির তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে। মায়ের মৃত্যুর পরে সে এখন মামার বাড়িতে আছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, চার বছর আগে দুর্গির সঙ্গে বিয়ে হয় সানির। দু’জনেই একই পাড়া অর্থাৎ ছাতুবাবু লেনের বাসিন্দা। মৃতার বাড়ির লোকের অভিযোগ, পেশায় বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি সানির সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই পণের টাকা আদায় করা নিয়ে দুর্গির উপরে অত্যাচার চলত। পুলিশকে রবি জানিয়েছেন, প্রথম দিকে তাঁর বোন এবং ভগ্নিপতি ছাতুবাবু লেনে থাকলেও কয়েক বছর ধরে তাঁরা আসগর মিস্ত্রি লেনে ভাড়া থাকছিলেন। অভিযোগ, সেখানেও মা-বাবার কাছ থেকে টাকা আনার জন্য দুর্গির উপরে চাপ দেওয়া হত। মৃতার পরিবারের তরফে সানি ছাড়া তার বাড়ির বাকি পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার রাতে ফের দুর্গি ও সানির মধ্যে অশান্তি হয়। অভিযোগ, সানি মারধর করে স্ত্রীকে। পরের দিন সন্তানকে নিয়ে ছাতুবাবু লেনে মা-বাবার কাছে ফিরে আসেন দুর্গি। অসুস্থ বোধ করায় স্থানীয় চিকিৎসককে দেখান। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বুধবার আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় দুর্গির। পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর পরেই সানি-সহ শ্বশুরবাড়ির বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে তপসিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার দেহে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে পুরো ঘটনা স্পষ্ট হবে। তবে রবিবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে ঠিক কী হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে যে চিকিৎসক দুর্গির চিকিৎসা করেছিলেন, তাঁর সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।