মঞ্চে সুনিধি চৌহান। নিজস্ব চিত্র।
তিনি শহরে আসছেন বড়দিনের আগের রাতে, খবর ছড়াতেই উষ্ণতার পারদ ক্রমবর্ধ্বমান কলকাতায়। ঘুম উড়েছে তাঁর ভক্তদের। উত্তেজনার পারদ চড়চড়িয়ে উর্ধ্বমুখী। তিনি আসার পর কী হল? মঞ্চে ‘ক্রেজ়ি কিয়া রে’ গেয়ে উঠতেই আক্ষরিক অর্থে পাগলপারা শহরবাসী। সুনিধি চৌহান। নাম তো বটেই, তাঁর অধিকাংশ গানের সঙ্গেও পরিচিত বাঙালি দর্শক। তবু ইউটিউব বা পর্দায় শোনা, আর সামনে থেকে শোনা এক?
যদিও শুরুটা এত মধুর নয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনুযোগ, দীর্ঘ অপেক্ষা, নানা অব্যবস্থার পর অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। যদিও মঞ্চে সুনিধির আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই শ্রোতাদের সেই খেদ উধাও! একের পর এক হিট গান গেয়ে মঞ্চে কার্যত ঝড় তুলেছেন তিনি। সঙ্গে তাঁর শরীরী হিল্লোল।
মঞ্চে তুফান সুনিধি চৌহানের। নিজস্ব চিত্র।
পরনে হাঁটু ঝুলের ‘লেদার ফিনিশ’ কালো স্কার্ট, গায়ে কালো-সাদা সিক্যুইনের টপ। আলো পড়তেই যেন জ্যোতি ঠিকরে আসছে! খোলা চুলে, পোশাকে উত্তুরে হাওয়ার অবাধ্যতা। সে সব সামলাতে সামলাতেই শহরবাসীকে অমোঘ ডাক গায়িকার, “সবাই তৈরি তো? আজ রাতে রক অ্যান্ড রোল চলবে তো?”
সুনিধির আহ্বান উপেক্ষা করার সাধ্য কার? সুরের নেশায়, কণ্ঠের মাদকতায় ডুবতে ডুবতে সোল্লাসে প্রত্যুত্তর শহরবাসীর, “আমরা তোমাকে ভালবাসি।” এই প্রথম শহরে গায়িকা। এত উষ্ণতা, আন্তরিকতা যে তাঁর জন্য অপেক্ষা করে ছিল, জানতেন? এই প্রসঙ্গে মঞ্চে একাধিক বার বিস্ময় প্রকাশ গায়িকার। ‘‘সত্যিই ভাবিনি কলকাতায় আমার এতটা সমাদর। প্রথম বার কলকাতায় অনুষ্ঠানের স্মৃতি মনে থাকবে’’, কণ্ঠে আবেগের পরত স্পষ্ট। শ্রোতাদের ভালবাসা ফেরাননি গায়িকা। জানিয়েছেন, তিনিও সমান ভাবে কলকাতার প্রেমে পড়েছেন। অনুষ্ঠানে ক্ষণিকের মধ্যেই দু’বার পোশাকও বদলে ফেলেছেন তিনি।
দর্শকের উন্মাদনা যখন তুঙ্গে, মঞ্চে হঠাৎ হাজির বলি অভিনেত্রী সান্য মলহোত্র। তাঁর আচমকা উপস্থিতিতে প্রথমে বিমূঢ় হলেও তার পরেই সোল্লাসে ফেটে পড়েছেন দর্শক। দেখা গেল, শুধুমাত্র তাঁর উপস্থিতিই নয়, সুনিধির গানের তালে পা-ও মেলালেন সান্য।
একের পর এক চেনা গান আর নাচের যুগলবন্দি সুনিধির। প্রজন্ম নির্বিশেষে কলকাতার শ্রোতারা অনাবিল আনন্দস্রোতে ভাসমান।