প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে সংক্রামক রোগের উৎকর্ষকেন্দ্র তৈরির রূপরেখা কী হবে, তা নিয়ে শুক্রবার স্বাস্থ্যকর্তাদের মধ্যে এক বৈঠক হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রামক রোগের গবেষণা কোন পথে এগোবে, তার চিকিৎসা কী ভাবে হবে, এ সব নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। গত জুলাইয়েই সংক্রামক রোগের এই উৎকর্ষকেন্দ্রের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে এই কেন্দ্র আলোচনার শীর্ষে চলে আসে। বিশেষ করে কোভিড ১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই উৎকর্ষকেন্দ্রের বিষয়টি আলাদা মাত্রা পেয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রোগের চিকিৎসা, গবেষণা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট মতের জন্য সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা চলছে। তাঁদের থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়ার কথা হচ্ছে। ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস’-এর বিশেষজ্ঞদের এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। যদিও পুরো বিষয়টি এখনও প্রাথমিক স্তরে বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তাদের একটি অংশ। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘কী ভাবে উৎকর্ষকেন্দ্রের কাজ এগোনো হবে, সে ব্যাপারে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, যে ভাবে সংক্রামক রোগের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, সেখানে এই উৎকর্ষকেন্দ্রের সত্যিই প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, অন্য রোগের চিকিৎসা বা গবেষণার তুলনায় সংক্রামক রোগের গবেষণা ও চিকিৎসার ধরন পৃথক। ফলে তাকে আলাদা গুরুত্ব দিতেই হবে। পরিসংখ্যানই সে কথা বলছে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গত ৪০ বছরে নতুন ১৮টি ‘হিউম্যান প্যাথোজ়েন’ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচটি নতুন সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে, যাদের মধ্যে তিনটিই হল জ়ুনোটিক (প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসে)। এক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ সংক্রামক রোগই প্রাণী থেকে আসে। ফলে সংক্রামক রোগ নিয়ে আলাদা চিন্তা করতেই হবে। একে অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত হবে না।’’
বিশেষজ্ঞেরা এও জানাচ্ছেন, শুধু করোনাভাইরাসের কথাই যদি ধরা হয়, তা হলে দেখা যাবে, গত ২০ বছরে তিন বার এই ভাইরাসের (সার্স, মার্স, সার্স-কোভ-২) সংক্রমণ হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক গবেষকের কথায়, ‘‘সার্স কোভ-২-এ অতিমারি আর হবে না ভাবলে সেটা ভুল হবে। কারণ, সংক্রামক রোগের ধরনই বলছে ভবিষ্যতে এই রোগের প্রাদুর্ভাবই বেশি হতে চলেছে।’’