মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।
ঘাটতি বাজেট পেশ করেও কলকাতা পুরসভার আয় বেড়েছে বলে জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার, আগামী অর্থবর্ষের আনুমানিক ১১২ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভার এই বাজেটে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৫০৫৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা আনুমানিক আয় হতে পারে পুরসভার। ব্যয় হতে পারে আনুমানিক ৫১৬৬ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। এর ফলে আনুমানিক ঘাটতির পরিমাণ হতে পারে ১১২ কোটি টাকা। মেয়র বলেন, ‘‘নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দিয়েও আয় বাড়িয়েছে কলকাতা পুরসভা। কমানো গিয়েছে বাজেট ঘাটতি।’’
গত বাজেটের আনুমানিক ঘাটতির তুলনায় ৩৪ কোটি টাকা কম এ বারের বাজেটে। বিগত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল ১৪৬ কোটি টাকা। বাজেটে উল্লেখ, ২০২২-২৩ গোটা অর্থবর্ষে সম্পত্তি কর খাতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ১১২০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে (২৭, জানুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত হিসেব) ইতিমধ্যেই ১০৬৮ কোটি টাকা এই খাতে আয় হয়েছে। যা গত অর্থবর্ষের উক্ত সময়কালের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। তবে, তথ্য বলছে, গত বাজেটে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তার কাছাকাছি পৌঁছনো যায়নি। লক্ষ্যের তুলনায় ৬৫৯ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।
মেয়র বলেছেন, ‘‘আয় অনেকটাই বাড়ানো গিয়েছে। বিশেষ করে বিভাগীয় আধিকারিক, কর্মীরা যে ভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন বকেয়া সম্পত্তি কর আদায় করেছেন, তাতেই প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা কোষাগারে ঢুকেছে। কিন্তু, বিজ্ঞাপন-সহ কিছু ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত আয় বাড়েনি। ফলে ঘাটতি থাকছেই।’’ কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্পত্তি কর আদায় আরও বাড়ানোর পাশাপাশি বিজ্ঞাপন খাতেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। তবে, নতুন বাজেটেও খরচের উপর এমবার্গো বা নিষেধাজ্ঞা রাখা হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার এই বাজেটকে দিশাহীন বলে আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। কলকাতার পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ বলেছেন, ‘‘এই পুরসভার বাজেটের কোনও সঠিক দিশা নেই, আছে শুধুই হতাশা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মেয়রের কাছে তো আর টাঁকশাল নেই, যে টাকা ছাপাবেন। ঘাটতি থাকলে, আয় না হলে কাজকর্ম চলবে কী করে!’’ বামফ্রন্ট কাউন্সিলার তথা পুরসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মধুছন্দা দেব বলেছেন, ‘‘ঘাটতি বাজেট হলে তার প্রভাব পুর পরিষেবায় পড়বেই। সেটাই হচ্ছে।" যদিও বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে মেয়র বলেন, বাজেটে খাতায়-কলমে ঘাটতি থাকতেই পারে। কিন্তু জনগণের স্বার্থে পুর পরিষেবায় কোনও আপস করা হবে না।’’