প্রতীকী ছবি।
ভোটের ডিউটির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে একই স্কুল থেকে যাচ্ছেন একাধিক শিক্ষক। তাঁদের প্রশ্ন, প্রশিক্ষণে গিয়ে কোনও এক জন শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হলে বাকি শিক্ষকেরা কী করবেন? তাঁরা নিয়ম মাফিক ভোটের ডিউটি করবেন, না কি ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে যাবেন?
রাজ্য প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের এ নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা নেই বলেই অভিযোগ করেছেন ভোটের ডিউটিতে যাওয়া ওই শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এ বিষয়ে অবিলম্বে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করুক নির্বাচন কমিশন।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের রামরিক ইনস্টিটিউশনের ১০ জন শিক্ষক সম্প্রতি ভোটের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। গত ৫ এপ্রিল হঠাৎ তাঁদের মধ্যে এক শিক্ষকের করোনা ধরা পড়ে। তাঁকে পরের দিনই কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। করোনায় আক্রান্ত ওই শিক্ষকের সঙ্গে আরও ন’জন শিক্ষক ভোটের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় ওই ন’জনের ভোটকর্মী হিসেবে যাওয়ার কথা।
এই অবস্থায় ওই ন’জন শিক্ষক কী ভাবে ভোটকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিয়েই এখন সংশয় তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাঁরা কি আদৌ ভোটের ডিউটি করতে যেতে পারবেন? কারণ, নিয়ম অনুযায়ী করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার কথা। সেই নিয়ম যদি মানতে হয়, তা হলে ভোটকর্মী হিসেবে তাঁরা কাজ করতে পারবেন না। ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘বহু শিক্ষকই এ বিষয়ে আমাদের সংগঠনকে প্রশ্ন করছেন। কিন্তু এর কোনও উত্তর আমাদের কাছে নেই। আমরা চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছি, এ ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা কী করবেন? এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা জারিরও দাবি জানিয়েছি।’’
যদিও বুধবার ওই ন’জন শিক্ষকের এক জন ফোনে জানিয়েছেন, সহকর্মীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরটা তাঁরা মঙ্গলবার বিকেলেই পেয়েছেন। তাঁদের কয়েক জন ইতিমধ্যেই নিজেদের করোনা পরীক্ষা করাতে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে ওই শিক্ষক জানান, ন’জনের বেশির ভাগেরই শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি।
ওই শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, সরকারি স্কুলে কর্মরত শিক্ষকেরা করোনার জন্য কোয়রান্টিনে যাওয়ার ছুটি পেলেও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা সরকার-পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের সেই সুবিধা নেই। করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা শিক্ষকদেরও কোনও ‘কোয়রান্টিন লিভ’ মঞ্জুর করেনি শিক্ষা দফতর। এখন যে হেতু করোনা আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার-পোষিত স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য কোয়রান্টিনে যাওয়ার ছুটির দাবি জানিয়ে শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছে ওই শিক্ষক সংগঠন। এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি ঠিকই, তবে সব ধরনের স্কুলের শিক্ষকেরাই যাতে কোয়রান্টিনের ছুটি পান, সে ব্যাপারে বিবেচনা করা হচ্ছে।’’