বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। বিজয়া সম্মিলনীতে আমন্ত্রণ না পেয়ে তৃণমূলের অন্দরে আবার ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটল। রবিবার দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাটের কাছে ফার্ন রোডে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে শাসকদলেরই কয়েক জন সমর্থকের বিরুদ্ধে। যার জেরে ভেস্তে যায় অনুষ্ঠান। এই ঘটনায় দুই গোষ্ঠীকে সতর্ক করলেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, রবিবার কলকাতার ৬৮ নং ওয়ার্ডে ফার্ন রোডে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে তৃণমূলেরই কয়েক জন সমর্থকের বাধার মুখে পড়তে হয় বাবুলকে। তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন সম্পর্কে তাঁদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ওই তৃণমূল সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের একাংশ স্থানীয় কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে দাবি করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে খোঁজ নিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমার। আগামী দিনে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্বের তরফে দুই পক্ষকে সতর্ক হতে বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার এক তৃণমূল নেতা বলেছেন, ‘‘জনসংযোগ করতেই রাজ্য জুড়ে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে দল। তাছাড়া দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের গড়। ফলে সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে। তাই এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে সতর্ক করা হয়েছে।’’
ঘটনার দিন বিক্ষোভকারীরা নিজেদের কাউন্সিলর অনুগামী বলে দাবি করেন। সূত্রের খবর, সেই সময় বাবুলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এখানে কাউন্সিলরের অনুগামী বলে কেউ নেই। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী।’’ যদিও রবিবার এলাকায় ছিলেন না কাউন্সিলর সুদর্শনা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তিনি কলকাতার বাইরে রয়েছেন। সোমবার তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।
বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের একাংশের ক্ষোভ কিছু দিন আগেও প্রকাশ্যে এসেছিল। সম্প্রতি ইকো পার্কে মুখ্যমন্ত্রীর বিজয়া সম্মিলনীতে আমন্ত্রণ পাননি বলে দাবি করে ক্ষোভ উগরে দেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন। ‘দলে বাবু ও চাকরের মধ্যে আমরা বোধহয় সেকেন্ডটার (দ্বিতীয়) মধ্যে পড়ি’ বলে মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ান তাপস। এই প্রেক্ষাপটে আবার বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে রবিবার বাবুলের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের অন্দরের যে ‘কলহ’ প্রকাশ্যে এল, তা এই পর্বে নয়া মাত্রা যোগ করল।