দেহ নিয়ে টানাপড়েন লেকটাউনের হাসপাতালে।
দেহ কার? তা নিয়েই মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লেকটাউনের এক হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ এবং রোগীর পরিবারের মধ্যে চলল টানাপড়েন। অভিযোগ লেকটাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাল্টে গিয়েছে এক করোনা আক্রান্তের দেহ। হাসপাতালের পাল্টা দাবি, ২১ দিন আইসিইউ-তে কোভিড চিকিৎসার পর রোগীর মুখ বদলে গিয়েছে। পেকে গিয়েছে দাড়ি-গোঁফ। উঠে গেছে চুলের রং। তাতেই পরিবারের চিনতে অসুবিধা হচ্ছে। অবশেষে দীর্ঘ টালবাহানার পর দেহ নিতে রাজি হয় মৃতের পরিবার।
গত ১২ মে কোভিড আক্রান্ত শঙ্কর গুছাইতকে মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল থেকে লেকটাউনের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেলেঘাটার বাসিন্দা শঙ্কর ইএসআই হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন। ভর্তির পর তাঁর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সোমবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয় পরিবারকে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল।
কিন্তু বিভ্রান্তি শুরু হয় ওই দেহের ‘মুখদর্শন’-এর পর থেকেই। পরিবার জানিয়ে দেয় ওই দেহ শঙ্করের নয়। তারা অস্বীকার করে দেহ নিতে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে দেহ পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মর্গ থেকে কোভিড ওয়ার্ড— সর্বত্র শঙ্করের খোঁজ শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে লেকটাউন থানার পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ইএসআই হাসপাতালে খবর দেয়। ডেকে পাঠানো হয় শঙ্করের চিকিৎসককেও। ওই হাসপাতালের সিইও দীপঙ্কর শতপথী বলেন, ‘‘আমরা সব জায়গায় খবর পাঠাই দেহ শনাক্তকরণের জন্য। চিকিৎসক এবং ইএসআই থেকে আসা কর্মীরা ওই দেহ শঙ্করের বলেই জানিয়েছেন। ওঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্য শঙ্করের দেহ চিনতে পেরেছেন। রাজি হয়েছেন দেহ নিতেও।’’
অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর শঙ্করের পরিবার তাঁর দেহ নিতে রাজি হয়। পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে থানা থেকে বলা হয় দেহ শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করতে এক মাস লেগে যাবে। তাই বাধ্য হয়েই ওই দেহকে শঙ্কর গুছাইতের বলেই মেনে নিলাম।’’