চা-প্রেমীদের জন্য সুখবর। চা-কে স্বাস্থ্যকর পানীয়ের স্বীকৃতি দিল এফডিএ। ছবি: ফ্রিপিক।
পানীয় হিসেবে চা ভাল না খারাপ? এক কথায় এর উত্তর দেওয়া মুশকিল। দুধ, লিকার, ভেষজ চা, আইস টি, গ্রিন টি— হরেক রকমের চা খাওয়ার চল রয়েছে। চায়ে ট্যানিন থাকে, এই বস্তুটি যেমন শক্তি জোগায় তেমনই নেশাও তৈরি করে। তাই চা খেলে শরীরের লাভ হবে না ক্ষতি, সেই নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছিল এত দিন। কেউ বলছিলেন, চায়ে কোনও পুষ্টিকর উপাদানই নেই। আবার কারও মত ছিল, চা বেশি খাওয়া মোটেই ভাল নয়। চা নিয়ে এই চাপানউতরের মাঝেই আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ বা ‘এফডিএ’ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, চা পানে কোনও ক্ষতি নেই। চা খুবই স্বাস্থ্যকর পানীয়।
এক কথায় চা-কে স্বীকৃতি দিয়েছে এফডিএ। আর তাতেই বিশ্ব জুড়ে চা-প্রেমীদের মধ্যে এখন খুশির আবহ। ভারতে শুধু নয়, গোটা বিশ্বেই চায়ের কদর রয়েছে। এ দেশের তো অধিকাংশেরই সকাল শুরু হয় চায়ে চুমুক দিয়ে। ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা দরকার হয়। ঘরোয়া আড্ডা, অফিসের মিটিং চা ছাড়া ভাবাই যায় না। বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে চা পরিবেশন করাই রেওয়াজ এখানকার মানুষজনের। চা-প্রেমীরা তো বলেই থাকেন, এক কাপ গরম চা খেলেই নাকি মনের যত ক্লান্তি চলে যায়। শরীরও তরতাজা হয়। কাজেই চা-কে মন্দ বলা যাবে না কোনওভাবেই।
এফডিএ-র স্বীকৃতি পাওয়ার পরে ‘নর্থ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন‘ ও ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, চা সকলের জন্যই নিরাপদ। সংশয়ের আর কোনও কারণই নেই।
চায়ে পে চর্চা
চা নিয়ে এত সন্দেহ তৈরি হয়েছে কয়েকটি গবেষণার রিপোর্টকে ঘিরে। দাবি করা হয়েছিল, চায়ে এমন উপাদান রয়েছে, যা ক্যানসারের কারণ হতে পারে। চা বেশি খেলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে, এমনও দাবি করা হয়।
ভারতে চা পর্ষদ অভিযোগ করেছিল, চা উৎপাদন এবং প্রস্তুতকারক অনেক সংস্থাই নিয়ম মানছে না। তাদের অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় ধরা পড়েছে, বেশির ভাগ চায়েই রয়েছে ক্ষতিকর রাসায়নিক, নিষিদ্ধ কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি। এমনকি, অনেক সংস্থাই যে গুণমান মেনে চা প্রস্তুত করছে না, রিপোর্টে তা-ও উল্লেখ করেছিল টি-বোর্ড। দেশের খাদ্যসুরক্ষা এবং গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ বা এফএসএসএআই)এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতেও বলা হয়েছিল। তারা জানিয়েছিল, বিপজ্জনক রাসায়নিকযুক্ত চা শরীরে নানা ধরনের রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, চায়ে ক্ষতিকারক পদার্থ থাকলে বাণিজ্যও ধাক্কা খাবে। কিন্তু এখন আর ভয়ের কোনও কারণ নেই। এফডিএ জানিয়ে দিয়েছে, চা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। গুণমান মেনে যদি প্রস্তুত করা যায়, তা হলে তা বিপদের কারণ হয়ে উঠবে না।