আরজি করে ঢুকছেন সিবিআই কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাতায়াত শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। ঘুরে দেখেছেন সেমিনার হলের আশপাশ। জরুরি বিভাগ, মর্গ ছাড়াও তাঁরা গিয়েছেন অধ্যক্ষের দফতরেও। তথ্যপ্রমাণ লোপাট থেকে শুরু করে দেহ পাচারের অভিযোগ— সব কিছুই খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। বাদ যাচ্ছে না অনেক ‘পুরনো কাসুন্দি’ও।
বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে আরজি করে ঘটে যাওয়া নানা পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গও। সূত্রের খবর, এর আগেও নাকি আরজি করে এক মহিলা চিকিৎসককে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছিল। উঠেছিল এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগও। আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সে সব পুরনো অভিযোগ আরও এক বার খতিয়ে দেখছে সিবিআই। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন নথিপত্র ও তথ্য। এই ঘটনার পিছনে সত্যিই কোনও ষড়যন্ত্র ছিল কি না, তদন্তে দেখা হচ্ছে তা-ও। বার বার যে সব চক্রের কথা উঠে আসছে বিভিন্ন মহলে, সেগুলির অস্তিত্ব নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার আরজি করের জরুরি বিভাগের ভবনটিতে এসে অনুসন্ধান চালিয়েছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তের স্বার্থে আরজি করের মর্গে গিয়েছিলেন কয়েক জন তদন্তকারী আধিকারিক। শুক্রবার দুপুরেও সিবিআইয়ের কয়েক জন কর্মকর্তা আরজি করে পৌঁছন। প্রথমেই তাঁরা যান অধ্যক্ষের দফতরে। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, হাসপাতালের সুপারের কাছে পুরো আরজি কর চত্বরের ম্যাপ এবং প্রতিটি ভবনের নকশা চাওয়া হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল ধর্ষণ এবং খুনের। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। এই আবহে অভিযোগ ওঠে, সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানায় গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। সিবিআইকেই সেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। শবদেহের পাশাপাশি হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সন্দীপের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ‘সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের শিক্ষক দেবাশিস সোমও।