বিক্ষোভ: শিক্ষক পদে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য এসএসসি পাশ করার পরে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীরা এত দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন করছিলেন সল্টলেকের করুণাময়ীতে। মঙ্গলবার তাঁরা কয়েক জন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক জনকে আটক করে। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক পদে ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর ও ৭ ডিসেম্বর তাঁদের পরীক্ষা হয়। সফল ছাত্রছাত্রীদের মেধাতালিকায় নাম ওঠে ২০১৭ সালে। এর পরে কিছু নিয়োগ হলেও তা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে। মেধা তালিকায় নাম থাকা বহু চাকরিপ্রার্থী তখন থেকেই নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছেন। এমনই এক জন চন্দন প্রধান বললেন, ‘‘নবম থেকে দ্বাদশের মেধা তালিকায় নাম ওঠা চাকরিপ্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রেস ক্লাবে ২৯ দিন অনশন করি আমরা। তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অনশন মঞ্চে এসে দ্রুত নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।’’
আর এক চাকরিপ্রার্থী প্রকাশ ঘোষ জানান, সেই সময়ে সামনেই ছিল লোকসভা নির্বাচন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে তিনি তাঁদের নিয়োগের বিষয়টি দেখবেন। প্রকাশ বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচন পেরিয়ে বিধানসভা নির্বাচন চলে এল। এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হল না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সে দিন শিক্ষামন্ত্রী থাকায় আমরা তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’
যদিও এই আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে গিয়ে এ ভাবে বিক্ষোভ একটা নতুন ধরনের আন্দোলন। আমি তীব্র ভাষায় এর নিন্দা করছি। আমার বাড়ির সামনে গিয়ে এই ভাবে বিক্ষোভ আন্দোলন করাটা কিন্তু সৌজন্যের পরিপন্থী।’’
এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের আটক করতে গেলে দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ কয়েক জনকে আটক করলেও পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এ দিন পার্থবাবুর বাড়ির সামনে থেকে তাঁরা চলে এলেও গত ৩১ জানুয়ারি থেকে করুণাময়ীতে তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন অনশনও করছেন।
শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে আন্দোলনের বিষয়টিকে নৈতিক ভাবে সমর্থন জানাননি রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষোভ করার অনেক জায়গা রয়েছে। কারও বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ করা ঠিক নয়।’’ যদিও এর পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘এই সরকার ছাত্র, শিক্ষক বিরোধী।’’