আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে উঠে আসে থ্রেট কালচারের অভিযোগ। কলেজ কাউন্সিল ৫১ জনকে সাসপেন্ড করে। তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘থ্রেট কালচার’ বা হুমকি সংস্কৃতি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার ওই হাসপাতালের কাছে মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট চান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তাঁর নির্দেশ, গত দু’বছরে থ্রেট কালচারের কত অভিযোগ জমা পড়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, কতগুলি অভিযোগ পুলিশকে জানানো হয়েছে, সব মিলিয়ে একটি রিপোর্ট দিতে হবে। আদালত এ-ও জানিয়েছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে শৃঙ্খলাভঙ্গ-সহ অন্য যে সব পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত নথিও জমা দিতে হবে আরজি কর কর্তৃপক্ষকে।
আরজি করের আন্দোলনের আবহে ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ ওঠে। তাতে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস নামে এক চিকিৎসকের নাম উঠে আসে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’, ‘থ্রেট কালচার’ চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। তার ভিত্তিতে ওই চিকিৎসককে সাসপেন্ডও করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) কলকাতা শাখা। যদিও অভিযুক্ত ওই চিকিৎসককে সম্প্রতি ক্লিনচিট দিয়েছে আইএমএ। বিরূপাক্ষকে সাসপেন্ড করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা শাখা, তা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। বস্তুত, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার সূত্র ধরেই উঠে এসেছিল বর্ধমান মেডিক্যালের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট বিরূপাক্ষের নাম। দাবি করা হয়, অডিয়ো ক্লিপে যে কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে, তা বিরূপাক্ষের। তাতে বিরূপাক্ষকে ‘হুমকি’ দিতে শোনা গিয়েছে।
সেই শুরু। তার পর গত সেপ্টেম্বরেই আরজি কর হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিল চিকিৎসক-সহ ৫১ জনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁদের মধ্যে হাউস স্টাফ, জুনিয়র ডাক্তারেরাও রয়েছেন। ওই ৫১ জনের বিরুদ্ধে হাসপাতালে থ্রেট কালচার বা হুমকি সংস্কৃতি চালানো, আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার অভিযোগ করা হয়। কলেজ কাউন্সিলের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ৫১ জনই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। গত ২২ অক্টোবর কলেজের সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে হাই কোর্ট।
ওই মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, আরজি কর-কাণ্ডের আগেও থ্রেট কালচারের অভিযোগ রয়েছে। তখন কি কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছিল? না কি আরজি করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ৫১ জনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে? গত দু’বছরে ওই রকম কত অভিযোগ রয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে আগামী শুনানিতে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর।