Illegal Construction by TMC Councilor

তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বেআইনি ভাবে ‘হাতি বাড়ি’ করেছেন, অভিযোগ পদ্মের, প্রশ্নও তুলবে অধিবেশনে

বিজেপি কাউন্সিলর দলের সভানেত্রী মীনা দেবী পুরোহিত জানিয়েছেন, তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বেআইনি বাড়ি’ কী ভাবে অনুমোদন পেল, তা অধিবেশনে মেয়রের কাছে জানতে চাইবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৪৯
Share:

তৃণমূল কাউন্সিলর অনন‍্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বাড়িটি বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত।

বাঘাযতীনে বহুতল হেলে পড়ার ঘটনায় এমনিতেই ‘অস্বস্তিতে’ তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভা। সেই আবহেই ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি’ ভাবে বাড়ি তৈরির অভিযোগ আনলেন বিজেপির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ। বৃহস্পতিবার পুরভবনে সজল অভিযোগ করেন, ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৯৭ নম্বর সন্তোষপুর অ্যাভিনিউয়ে একটি বিরাট ‘অবৈধ’ বাড়ি নির্মিত হয়েছে। সেটি করেছেন অনন্যা। বাড়ির নিচের অংশ তৈরি হয়েছে একটি বিশাল হাতির মাথার আদলে। তাই এলাকায় ইতিমধ্যেই ‘হাতি বাড়ি’ বলে পরিচিতিও পেয়ে গিয়েছে ওই ভবনটি।

Advertisement

ওই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কলকাতা পুরসভার কোনও আধিকারিক। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ডিজি-সহ বরিষ্ঠ আধিকারিকেরা বাঘাযতীনের বাড়িটি নিয়ে ব্যস্ত। বৃহস্পতিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বাঘাযতীনে গিয়ে বাড়িটি পরিদর্শনের পাশাপাশি কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছেন। বিল্ডিং বিভাগের কর্তারা সেই নির্দেশ কার্যকর করতে ব্যস্ত। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত (মলয়) মজুমদার বলেছেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাই কিছু বলতে পারব না।’’ অনন্যার দু’টি মোবাইলে ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব আসেনি। অনন্যার বক্তব্য পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে তা যুক্ত করা হবে।

সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ এলাকায় তৃণমূল কাউন্সিলরের নির্মীয়মাণ বাড়িটি হাতি বাড়ি বলেই পরিচিত। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগের পাশাপাশি বেশ কিছু নথিও পেশ করেছেন বিজেপির সজল। তাঁর দাবি, মিনু রানি ভাওয়ালের থেকে দোতলা বাড়িটি কেনেন অনন্যা ও তাঁর পরিবার। তার পর নতুন বাড়ি তৈরি করে সেটিকে ‘বেআইনি’ ভাবে পাঁচতলা করা হয়। এর পর বাড়ির পিছনের জমিটি কিনে সেখানে ‘অবৈধ’ ভাবে আরও একটি পাঁচতলা বাড়ি তৈরি করে সামনের বাড়িটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সজলের বক্তব্য, ওই বাড়িটি নিয়ে কলকাতা পুরসভায় অভিযোগ জমা পড়েছিল। বিল্ডিং বিভাগ থেকে গত বছরের জুন মাসে বাড়িটির ‘অবৈধ’ অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশও জারি হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর হয়নি। সজলের অভিযোগ, অনন্যা ‘প্রভাব’ খাটিয়ে বাড়িটির বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশটি স্থগিত করিয়ে দিয়েছেন। গত শারদোৎসবের আগে মেয়র পারিষদদের বৈঠকে ওই নির্মাণকে ‘মান্যতা’ দিয়ে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সজলের বক্তব্য, ‘‘বুধবারেই মেয়র বলেছেন, বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে কাউন্সিলরদের কোনও যোগ নেই। এই ক্ষেত্রে কাউন্সিলর নিজেই বেআইনি করছেন। সেই বেআইনিকে পুরসভা বেআইনি ভাবে রেগুলারাইজ করে দিচ্ছে!’’

Advertisement

কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, পুরসভায় মালিকপক্ষের তরফে যে নথি দেওয়া হয়েছিল, তাতে কাঠামো নির্মাণের আয়তন অনেক কম দেখানো হয়েছিল। মেয়র পারিষদদের বৈঠকে ‘হাতি বাড়ি’কে আইনি অনুমোদন দেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন যাদবপুরের বিধায়ক তথা মেয়র পারিষদ দেবব্রত। কিন্তু তাঁর প্রতিবাদকে সে ভাবে ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হয়নি। দেবব্রত অবশ্য বৃহস্পতিবার বারংবার বলেছেন, ওই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বসছে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন। বিজেপি কাউন্সিলর তথা দলের সভানেত্রী মীনা দেবী পুরোহিত জানিয়েছেন, ওই বিষয়টি তিনি পুর অধিবেশনে স্বয়ং মেয়রের কাছেই জানতে চাইবেন। ফলে অনন্যার ‘হাতি বাড়ি’ নিয়ে সরগরম হতে পারে পুরসভার মাসিক অধিবেশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement