মিজ়োরামে গ্রেফতার মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা। —প্রতীকী চিত্র।
মিজ়োরামে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ)-এর নেতা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মিজ়োরামের মামিত জেলায় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই অভিযানেই মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা-সহ পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছেন। উদ্ধার হয়েছে ছ’টি একে-৪৭ রাইফেল, ১০ হাজারেরও বেশি কার্তুজ এবং ১৩টি ম্যাগাজ়িন।
মিজ়োরাম পুলিশের দাবি, আন্তর্জাতিক স্তরে বেআইনি অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ধৃতেরা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, মায়ানমারের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে অস্ত্রের ব্যবসা করছিল অপর এক বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। দ্বিতীয় গোষ্ঠীটি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সক্রিয় বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে পুলিশ।
মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে এই অভিযানকে আন্তর্জাতিক স্তরে বেআইনি অস্ত্র কারবারের বিরুদ্ধে একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে ব্যাখ্যা করছে তারা।
মায়ানমারে জুন্টা সেনা এবং বিদ্রোহী জোটের বাহিনীর সংঘর্ষের জেরে এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সু চির শাসনের পতনের আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানো শুরু করে দিয়েছে।