বাঘাযতীনে হেলে পড়া সেই ফ্ল্যাটবাড়ি। — নিজস্ব চিত্র।
এক রাতের মধ্যেই আরও হেলে পড়েছে বাঘাযতীনের ফ্ল্যাটবাড়ি! এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। আতঙ্কে চোখের পাতা এক করতে পারছেন না লাগোয়া বাড়িগুলির বাসিন্দারা। সেই আবহেই বুধবার সকাল থেকে ফের শুরু হয়ে গেল হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ভাঙার কাজ। মঙ্গলবার রাতে ওই ফ্ল্যাটবাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছিল। বুধের সকালেও পুরোদমে কাজে লেগে পড়েছেন পুরসভার কর্মীরা। পৌঁছেছেন ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারও।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মাসখানেক আগে ওই ফ্ল্যাটবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তার পর থেকেই বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়েছিল বাড়িটি। গত ১৭ ডিসেম্বর শুরু হয় বাড়ি ‘সোজা করার’ প্রক্রিয়া। সেই সময় পুর কর্তৃপক্ষের তরফে ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর ১০-১২ আগে জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি ভাবে ওই বহুতল নির্মাণ করা হয়েছিল। চারতলা বাড়ি নির্মাণের অনুমোদনও ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে দেবব্রত বলেন, “এই বাড়ির আদৌ কোনও অনুমোদন প্রাপ্ত প্ল্যান রয়েছে কি না আমার সন্দেহ আছে। সম্প্রতি হরিয়ানার এক সংস্থার সাহায্যে বাড়িটি লিফ্ট করার চেষ্টা চলছিল। এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতিও নেওয়া হয়নি।” তা হলে পুরসভা কী করছিল? দেবব্রতের উত্তর, “এটা কলোনি এলাকা। কলোনি এলাকায় কোনও ফ্ল্যাটবাড়িরই অনুমোদন নেই। সিপিএম আমলে এমন অনেক বাড়িই তৈরি হয়েছিল।’’ উল্লেখ্য, এর পরেই এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব।
মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনে ‘শুভ অ্যাপার্টমেন্ট’ নামে ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ে। তবে বাসিন্দাদের কেউ সেখানে ছিলেন না, তাই বড়স়ড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং পুরসভার আবাসন বিভাগের আধিকারিকেরা। যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত ছাড়াও পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ সদস্য মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্তও এলাকায় যান। রাতেই এ নিয়ে এফআইআর দায়ের হয় নেতাজিনগর থানায়। শুরু হয় বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া। ঘটনার পর থেকেই ওই বহুতলের প্রোমোটার সুভাষ রায় ফেরার। তাঁর খোঁজ চলছে।