গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন চলচ্চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজের জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন অনীক।
গত ১ জুন লোকসভা ভোটের সপ্তম তথা শেষ দিন অনীকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। শ্লীলতাহানি-সহ একগুচ্ছ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনাচক্রে, সে দিন ভোট দিতে গিয়ে স্থানীয়দের একাংশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিলেন অনীক। তিনি নিজেই ফেসবুক লাইভে সে কথা জানিয়েছিলেন।
ওই লাইভে অনীকের দাবি, বাড়ি থেকে বেরিয়ে সদর দরজার ও পারে দেখলেন একাধিক রাজনৈতিক দলের ক্যাম্প। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের ক্যাম্পে অনেক লোক, সিপিএমের দুই জন টিমটিম করছে। আর বিজেপি তথৈবচ।” হঠাৎ জনৈক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, “এখানে এত জন কী করছেন? হয় ভোট দিতে যান না হলে বাড়ি চলে যান।” প্রাথমিক ভাবে পরিচালক ভেবেছিলেন, তাঁরা ঠিকই বলছেন, নিয়ম মেনে খুব ভাল কাজ হচ্ছে। কিন্তু এর পরে তিনি দেখেন, ১০-১৫ ফুট দূরে তৃণমূলের আরও একটি ক্যাম্প। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ প্রার্থীর বড় বড় ছবি।
পরিচালক অনীক তাঁদের বলেন, “এটাও তো নিয়মবিরুদ্ধ। আজ ভোটের দিনে বুথের এত কাছে এই সব। শুধু পতাকা লাগানো যায়।’’ এই কথা শোনার পরে তাঁরা মেনে নেন, এটা নিয়মবিরুদ্ধ। পরিচালকের কথায়, “ওরা যে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছিল সেগুলো খুবই ছেঁদো।” কিন্তু কথা বাড়তে বাড়তে ক্রমশ তা বচসায় পরিণত হয়। সেই সময় ক্যাম্পের কিছু অংশ সরিয়ে নেন তাঁরা।
কিন্তু ভোট দিয়ে ফেরার পথে তাঁদের রোষের মুখে পড়লেন পরিচালক। অনীক দত্তের কথায়, “কানের পাশে দু’জন ‘খেলা হবে, খেলা হবে’ বলে চিৎকার করে গেল। তার পরে ঝাঁকে ঝাঁকে লোক চলে এল।” পাশের বস্তি থেকে ছেলেদের দল, কিছু মহিলা এসে পরিচালকের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষ তাঁর পরিচিত। ছোটবেলা থেকে দেখছেন তাঁদের। দুষ্কর্মের জন্য নাম রয়েছে এলাকায়। তাঁরা পরিচালকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গালিগালাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ।
অনীক দত্ত বললেন, “আমাকে বলেছে, ‘কী করে সাহস হয়। জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লাগতে এসেছ’! কেউ কেউ বলল, ‘ব্যাটা বিজেপি’!” তাঁকে এ-ও বলা হয়, “মেরে সাবাড় করে দেব।” তাঁকে ৪ জুনের (ভোটগণনার দিন) পরে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে ফেসবুক লাইভে অনীক বলেছিলেন, “আপনাদের জানিয়ে রাখলাম ঘটনাটি। পুলিশ হয়তো কোনও ভাবে দেখবে বিষয়টি। আপনারা যদি দেখেন ৪ তারিখে আমার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হয়েছে তা হলে বুঝবেন কারা দায়ী।’’