(বাঁ দিক থেকে) একনাথ শিন্ডে, অজিত পওয়ার এবং দেবেন্দ্র ফডণবীস। — ফাইল চিত্র।
গভীর রাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বৈঠক করলেন দুই উপমুখ্যমন্ত্রী, দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং অজিত পওয়ারের সঙ্গে। আর তার পরেই মহারাষ্ট্র বিজেপির কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা রওনা হলেন দিল্লির উদ্দেশে।
সোমবার রাত থেকে চলা এই ঘটনাপ্রবাহের জেরে মরাঠা রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও শাসকজোটের দাবি, লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করতেই অজিতের সরকারি বাসভবনে ওই বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল।
লোকসভা ভোটের পরেই নতুন করে টানাপড়েন শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে বিজেপি, শিন্ডেসেনা এবং অজিতপন্থী এনসিপির জোট ‘মহাদ্যুতি’র অন্দরে। শিন্ডে শিবিরের কয়েক জন বিধায়ক শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে ‘খবর’। অজিতপন্থী অন্তত ১৫ জন বিধায়কের সঙ্গে শরদ পওয়ারের ‘যোগাযোগের’ জল্পনাও রয়েছে।
এই আবহে ওই বৈঠকে মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে আলোচনাও হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। আগামী ২৭ জুন থেকে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। বাদল অধিবেশনে শাসকজোটের ঐক্য বজায় রাখার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে।
চলতি বছরের অক্টোবরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। সোমবারই বিজেপির তরফে সে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার দুই সদস্য ভূপেন্দ্র যাদব ও অশ্বিনী বৈষ্ণোকে। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতেই রাজ্যনেতারা দিল্লি গিয়েছেন বলে ওই সূত্রের খবর।
লোকসভা ভোটে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা এবং অজিতপন্থী এনসিপির পাশাপাশি এনডিএ-তে ছিলেন রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষের নেতা মহাদেব জানকর। পাশাপাশি রাজ ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনস)-ও সমর্থন জানিয়েছিল এনডিএ-কে। তবুও বিপর্যয় এড়ানো যায়নি। ৪৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে এ বার বিরোধী জোট মহাবিকাশ আঘাড়ী তথা ইন্ডিয়া মঞ্চ পেয়েছে ৩০টি আসন। তার মধ্যে কংগ্রেস ১৩টি, উদ্ধবের শিবসেনা ন’টি এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি আটটিতে জিতেছে।
অন্য দিকে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন ‘মহাদ্যুতি’ জোট (বিজেপি, অজিতপন্থী এনসিপি, একনাথ শিন্ডেপন্থী শিবসেনা) জিতেছে ১৭টি আসনে। বিজেপি ন’টি, শিন্ডেসেনা সাতটি, অজিতপন্থী এনসিপি পেয়েছে মাত্র একটি আসন। সাংলি লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা বিশাল পাটিল। জেতার পরেই সনিয়া গান্ধী এবং রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কংগ্রেসের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটের নেতারা ইতিমধ্যেই বিধানসভা ভোটেও ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। ফলে মহারাষ্ট্র সরকার রক্ষা পদ্মশিবিরের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে।