অবরোধে আটকে পড়ার ছবি তুলে কুৎসার অভিযোগ বাদশার

সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ও মন্তব্য দেখার পরেই লালবাজারের সাইবার শাখায় যোগাযোগ করেছেন ওই অভিনেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৯
Share:

অভিনেতা বাদশা মৈত্র।—ফাইল চিত্র।

মাথায় ফেজ টুপি, হাতা গোটানো সাদা জামার উপরে ধূসর রঙের জহর কোট পরে মোবাইলে কথা বলছেন পরিচিত এক মুখ। পিছনে যুবকদের জটলা। জ্বলছে আগুনও।

Advertisement

নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রাজ্য জুড়ে বন্‌ধ, ভাঙচুরের পরিস্থিতিতে এই ছবি তেমনই কোনও এক জায়গার। রবিবার সকাল থেকে সেই ছবি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে ফেজ টুপি পরে ফোনে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে অভিনেতা বাদশা মৈত্রকে। তাঁর ওই ছবি পোস্ট করে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, বাদশা ওই তাণ্ডবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ও মন্তব্য দেখার পরেই লালবাজারের সাইবার শাখায় যোগাযোগ করেছেন ওই অভিনেতা। অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তিনি বলছেন, ‘‘বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ তবে শনিবার সকালে সারগাছির ওই অবরোধস্থলে যে তিনি কিছু ক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন তা জানান বাদশা। তাঁর দাবি, ডোমকলে ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্মেলনে অতিথি হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে অবরোধে তাঁর গাড়ি আটকে যায়। সেই সময়ে বাদশা নেমে অবরোধকারীদের অনুরোধ করলেও তাঁরা রাস্তা ছাড়েননি। এর পরে ডিওয়াইএফআই-এর সদস্যদের ফোন করে বিষয়টি জানালে তাঁরা বাইকে করে এসে গ্রামের পথ ধরে বাদশাকে ডোমকলে পৌঁছে দেন।

Advertisement

এ দিন বাদশা বলেন, ‘‘যখন ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে ফোন করছিলাম তখনই কেউ ছবিটা তুলেছেন। এর পরে টুপিটিকে কেন্দ্র করে একটা রং লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আজেবাজে কথা বলছেন।’’ মাথার ফেজ টুপির বিষয়ে ওই অভিনেতার দাবি, ‘‘আমার একটি শ্যুটিংয়ের পোশাকের অঙ্গ ছিল ফেজ টুপিটি। ওটি আমার খুব প্রিয়। বহু জায়গাতেই ওটা পরে যাই। ওই টুপি পরা বহু ছবিও আছে।’’ বিরোধিতার নামে রাস্তা, ট্রেন আটকে জনজীবন বিপর্যস্ত করাকে সমর্থন করেন না বাদশা। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজনৈতিক দল, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আন্দোলন হওয়া উচিত।’’

তবে এই নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের আবহে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ উঠছিলই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে রাতারাতি টুইটার অ্যাকাউন্টে ধর্মীয় পরিচয় ‘বদলে’ নাগরিকত্ব আইনের সপক্ষে প্রচার। কয়েক দিন ধরেই টুইটারে এই আইনের সমর্থনে একটি বার্তা ছড়াচ্ছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমি মুসলিম। আমি সিএবি বিল সমর্থন করি। আমার মুসলিম ভাইয়েরা দেশজুড়ে এই বিলের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছে আমি তার কঠোর নিন্দা করছি। হয় তারা এই বিলটি বুঝতে পারেনি এবং প্রভাবিত হয়েছে অথবা তারা জেনেশুনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই সরকারকে নিশানা করছে। কিন্তু আমি এই বিলের জন্য গর্বিত। জয় হিন্দ।’’

টুইটারে বহু অ্যাকাউন্ট থেকে অবিকল একই এই টুইটটি করা হচ্ছিল। ভুয়ো খবর ধরার একটি সংস্থা এমন সাতটি অ্যাকাউন্টের আগেকার টুইটের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারী আগে নিজেকে ‘হিন্দু’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement