যেখানে অবস্থানে বসেছিলেন, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সেই রাস্তা পরিষ্কার করছেন ডাক্তারেরা। ছবি: সারমিন বেগম।
প্রায় ২২ ঘণ্টা ধরে বসেছিলেন। খাওয়াদাওয়া করেছেন সেখানেই। রাতে যতটুকু ঘুম হয়েছে, সেটাও কলকাতা পুলিশের সদর দফতরের অদূরে রাজপথে। খাবারের প্যাকেট, বসার জন্য আনা কাগজ, জলের বোতল ইত্যাদি জমে ছিল। অবস্থান তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণার পর সেই সব আবর্জনা, বর্জ্য জিনিসও ঝাঁট দিয়ে সরালেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরাই। এক জুনিয়র ডাক্তারের কথায়, ‘‘সমাজ পরিচ্ছন্ন করতে পথে নেমেছি। জঞ্জালমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়েছি। এটা তারই অংশ।’’ এ ভাবেই কেউ হাত দিয়ে কাগজ কুড়োলেন, কেউ কালো প্লাস্টিকের প্যাকেট (বিন ব্যাগ) নিয়ে এসে পড়ে থাকা খাবারের প্যাকেট ভরলেন। কেউ ঝাড়ু নিয়ে রাস্তা পড়ে থাকা বর্জ্য তুলে রাস্তার এক পাশে সরিয়ে দিলেন। জুনিয়র ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, পুরসভার সাফাইকর্মীদের কাজে সাহায্য করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝাড়ু হাতে চিকিৎসকদের দেখা গেল বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে। তার মধ্যেই কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করে সোমবার বিকেলে লালবাজার অভিযান শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দিনের শেষে আটকে গিয়েছিলেন পুলিশের তোলা প্রায় ৯ ফুট উঁচু লোহার ব্যারিকেডের সামনে। তবে প্রায় ২২ ঘণ্টা পর জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তাঁর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। শুরু থেকে যে প্রতীকী মেরুদণ্ড নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন তাঁরা, সেটিও সঙ্গে নিয়ে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে প্রবেশ করেন। ঘণ্টাখানেকের বৈঠকের পরেই অবস্থান তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। তার পরেই দেখা গেল রাস্তা পরিষ্কার করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর অবশ্য সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা। লালবাজার থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা বলেন, “১৪ তারিখ (অগস্ট) ও ১২ (অগস্ট) তারিখের ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁরা স্বীকার করেছেন, এটা পুলিশের ব্যর্থতা। কিন্তু এই আলোচনার পর কোনও সদুত্তর পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে পাইনি। আমরা আমাদের দাবিতে এখনও অনড়। নৈতিক দায় নিয়ে সিপির পদত্যাগ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।”