প্রতীকী ছবি।
রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায়। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা লুটের ঘটনায় আরও দুই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করল লালবাজার। ধৃতদের নাম জয়দীপ রায় ও রণবীর সিংহ। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। হুগলির তেলিনিপাড়া থেকে রাজ্য পুলিশের এসআই জয়দীপকে ধরা হয়। পরে তাকে জেরা করে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার করা হয় রণবীরকে। রণবীর কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কর্মী হলেও সল্টলেকে এক সরকারি সংস্থায় ডেপুটেশনে ছিল। এ নিয়ে এই ঘটনায় মোট চার জন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করল লালবাজার। এ ছাড়া, আরও পাঁচ জনকে আগেই ধরা হয়েছিল।
পুলিশি সূত্রের খবর, গত ৯ জুন বিকেলে পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে তালতলা থানা এলাকার লেনিন সরণির মৌলালি মোড়ের কাছ থেকে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর সঙ্গীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় দশ জন। অভিযুক্তেরা এসেছিল দু’টি গাড়িতে করে। দু’জনকে তারা সল্টলেকের করুণাময়ীতে নিয়ে গিয়ে ব্যবসায়ীর কাছে থাকা এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তার পরে তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। এর পরে অভিযুক্তেরা ওই ব্যবসায়ীকে পুলিশে কিছু না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। পুলিশের দাবি, ভয় পেয়ে যাওয়ায় প্রথমে ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের না করলেও পরে পুলিশের কর্তারা যোগাযোগ করলে প্রায় এক মাস বাদে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
তদন্তকারীরা জানান, তদন্তে নামার পরে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ, বিশেষ করে একটি হোটেলের ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্তেরা সকলেই এক জায়গায় রয়েছে। তা দেখেই তাদের শনাক্ত করা হয়। অগস্ট মাসে গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। তাদের জেরা করে গত ১৬ অক্টোবর মালদহ থেকে গ্রেফতার করা হয় অমিয় উপাধ্যায় নামে কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলকে। অমিয়কে জেরা করে স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের এক কনস্টেবলের নাম উঠে আসে। গত ২৫ অক্টোবর দেবাশিস দাস নামে ওই পুলিশকর্মীকে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, দেবাশিস এবং অমিয়কে জেরা করতেই জয়দীপের নাম উঠে আসে।
ধৃত জয়দীপ ও রণবীরকে শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্তেরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। অভিযুক্তদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তাদের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন।
তদন্তকারীরা জানান, এই ঘটনায় ওই চার জন পুলিশকর্মী জড়িত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া, আরও এক জন এখনও পলাতক। তাকে পাওয়া গেলেই লুটের টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আশা তদন্তকারীদের।
অন্য দিকে, তল্লাশির নামে ৩৩ লক্ষ টাকা লুটের মামলায় আরও কয়েক জন জড়িত বলে দাবি করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে দুই কনস্টেবল ও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে। লালবাজারের দাবি, একবালপুর থানার ওই দুই কনস্টেবল প্রভাত বেরা এবং স্বপনকুমার বিশ্বাস কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ময়ূরভঞ্জ রোডে ডিউটি করতে গিয়েছিলেন।