প্রতীকী ছবি।
কলেজে বিজ্ঞানের ছাত্রীদের জন্য বছর পাঁচেক আগে ‘সিনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’ মেধাবৃত্তির ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞানপড়ুয়া মেয়েদের জন্য ‘জুনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’ মেধাবৃত্তি চালু করল জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ। ছাত্রীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গণিত (এসটিইএম) পড়তে উৎসাহ দেওয়ার জন্যই এই বৃত্তি।
এই উদ্যোগের পুরোটাই জগদীশ বোস সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চের। আর্থিক সহায়তা করবে রাজ্যের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও জৈবপ্রযুক্তি দফতর। মাসে ১২৫০ টাকা ছাড়াও এই বৃত্তির অঙ্গ হিসেবে বছরে এক বার ৫০০০ টাকা দেওয়া হবে। ‘সিনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’র মতো এই বৃত্তিপ্রাপক ছাত্রীরাও সারা বছর বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মশালায় যোগদানের সুযোগ পাবে।
রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের অধীন জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ বিজ্ঞান শিক্ষা প্রচারের কাজ করে। ছাত্রছাত্রীদের মেধাবৃত্তিও দেওয়া হয়। উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান শাখায় যে-সব ছাত্রী পড়াশোনা করছে, তাদের জন্য আলাদা ভাবে চালু হল এই ‘জুনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’ মেধাবৃত্তি। কলেজের বিজ্ঞানপড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য ‘সিনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’ মেধাবৃত্তি চালু হয়েছিল ২০১৭ সালে।
বিজ্ঞানপড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য এই পৃথক মেধাবৃত্তি কেন? জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ সংস্থার অধিকর্ত্রী মৈত্রী ভট্টাচার্য জানান, কলেজের বিজ্ঞানপড়ুয়াদের বৃত্তির বন্দোবস্ত আছে আগে থেকেই। পরে তাঁরা লক্ষ করেন, ছাত্রের তুলনায় সেই বৃত্তিপ্রাপক ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। বৃত্তির জন্য প্রায় ১০ হাজার আবেদন জমা পড়ে। পরীক্ষা নিয়ে প্রথমে ৫০০ জনকে বাছাই করা হয়। সেখান থেকে ২০০ জনকে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে বৃত্তির জন্য মনোনীত করা হয়। কিন্তু ছাত্র-প্রাপক ৮০% হলে বাকি মাত্র ২০ শতাংশ প্রাপক ছাত্রী। মেয়েদের মধ্যে বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহ কম। এর কারণ খানিকটা আর্থ-সামাজিক। মেয়েরা বিজ্ঞান পড়ালে টিউশনে অতিরিক্ত খরচ করতে হবে বলে মনে করেন অনেকেই। তাঁরা ছেলেকে বিজ্ঞান পড়ালেও মেয়েকে পড়াতে চান না।
তাই মৈত্রীদেবীরা কলেজে বিজ্ঞান পড়তে ছাত্রীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালে ‘সিনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’ মেধাবৃত্তি চালু করেন। প্রথম ২০০ ছাত্রছাত্রী আগে থেকে চালু মেধাবৃত্তি পাওয়ার পরে বাকি তালিকা থেকে ৫০ জন ছাত্রীকে বেছে নেওয়া হয়। নতুন মেধাবৃত্তি দেওয়া হয় তাঁদেরই।
মৈত্রীদেবী জানান, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেধাবৃত্তি চালু করা হয় ২০১৫ সালে। তখনও একই অভিজ্ঞতা হয় তাঁদের। দেখা যায়, প্রথম ২০০ জন মেধাবৃত্তি প্রাপকের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। সেই জন্য বিজ্ঞানপাঠে ছাত্রীদের আরও উৎসাহ দিতে প্রথম ২০০ পড়ুয়া মেধাবৃত্তি পাওয়ার পরে এ বার থেকে আরও ৫০ জন ছাত্রীকে বাছাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাঁদের বলা হবে ‘জুনিয়র বিজ্ঞানী কন্যা’।