খোলা বিবৃতি দিয়ে অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যেরা জানালেন, রামনবমী উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে ‘ধর্মীয় মেরুকরণ’-এর রাজনীতি চলছে। — ফাইল ছবি।
রামনবমীকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একাংশে যে অশান্তি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে এ বার সরব হলেন বিদ্বজ্জনেরা। খোলা বিবৃতি দিয়ে অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যেরা জানালেন, রামনবমী উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে ‘ধর্মীয় মেরুকরণ’-এর রাজনীতি চলছে। আর এই পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা উদ্বেগও প্রকাশ করলেন।
খোলা বিবৃতিতে সই করেছেন অপর্ণা, কৌশিক, অনির্বাণ, শ্রীকান্ত আচার্য, ঋদ্ধি সেন, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, রেশমী সেন, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা খোলা বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘‘রামনবমীর উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে গত ৬ দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে যে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ড সক্রিয় হয়ে উঠেছে, নাগরিক হিসাবে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন বোধ করছি। তীব্র ভাবে এই ঘটনাবলির প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’
অশান্তির ঘটনায় পুলিশকে ‘নিরপেক্ষ ভাবে’ কর্তব্য পালনের কথা মনে করিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রকাশ্যে পুলিশের ‘গাফিলতি’র প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। বিদ্বজ্জনেরাও খোলা চিঠিতে পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয় ভূমিকা’র নিন্দা করেছেন। তাঁরা বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘‘প্রশাসনিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। সাধারণ মানুষের প্রাণ এবং সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের। সেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছি।’’ এর পর ‘উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ’-এর দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যদের প্রকাশ করা সেই বিবৃতি। ছবি: সংগৃহীত
এই চিঠি প্রসঙ্গে অনির্বাণ একটি টিভি চ্যানেলকে বলেন, ‘‘রামনবমী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ধর্মের সঙ্গে যোগ ভক্তির। তা যদি ধর্মীয় মেরুকরণের চেহারা নেয়, তাতে যদি এ রকম হিংসাত্মক ঘটনা দেখা দেয়, তা হলে উদ্বেগজনক। আমাদের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি যে শান্ত আছে তা-ও নয়। সৌহার্দ্যের উপর, সম্প্রীতির উপর বার বার আঘাত নামছে। সত্যি জানি না এ সব কবে বন্ধ হবে।’’ কেন বিদ্বজ্জনদের তরফে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হল, তাও জানিয়েছেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিল্পী, অভিনয় করি, গান করি। আমরা সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। তাই এ রকম বিবৃতিই দিতে পারি।’’ তবে সাধারণ মানুষের উপর তাঁর আস্থা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের যে চেষ্টা চলছে, তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন। সাধারণ মানুষের উপর আস্থা রয়েছে। তাঁরা এই হিংসাকে জিতে যেতে দেবেন না। তাঁরা এই জিনিস মেনে নেবেন না। এই আস্থা রয়েছে।’’