Mamata Banerjee

বন্দুক নিয়ে নৃত্য করতে বলেছিল রাম? ‘রামনবমীর মিছিলের’ বন্দুকধারী ধরা পড়তেই তোপ মমতার

দিঘায় কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, বাংলার মানুষ অশান্তি চায় না। বাংলার মানুষের সংস্কৃতি এ রকম নয়। মুঙ্গের থেকে লোক এনে অশান্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২০
Share:

মঙ্গলবার দিঘার কর্মিসভায় মুঙ্গের থেকে ধৃত যুবকের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। ছবি: ফেসবুক।

ভিডিয়োয় ধরা পড়া সেই বন্দুকধারী যুবক পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই বিজেপির দিকে আবার আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দিঘায় দলীয় কর্মিসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘রামনবমী করতে কাউকে বাধা দিইনি। রামের নাম বদনাম করতে বুলডোজার, ট্র্যাক্টর নিয়ে ঢুকেছে হাওড়ায়। পেট্রোল মশলা নিয়ে ঢুকেছে, বন্দুক নিয়ে ঢুকেছে।’’ এ সব বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এ-ও জানালেন, বিজেপি পারে না বলেই অন্য রাজ্য থেকে লোক এনে অশান্তি ছড়াচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সঙ্গে সিপিএমেরও তুলনা টেনেছেন মমতা। জানিয়েছেন, সিপিএমও এমনি করত। তিনি দেখেছেন সেই ৩৪ বছরের অত্যাচার।

Advertisement

গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার হাওড়া জেলার একটি এলাকায় অশান্তি ছড়ায়। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতারা একটি ভিডিয়ো টুইট করেন। সেখানে বন্দুক হাতে এক যুবককে দেখা যায়। তৃণমূলের তরফে বলা হয়, এটি হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলের ভিডিয়ো। আনন্দবাজার অনলাইন অবশ্য সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। ভিডিয়োর ওই বন্দুকধারী যুবককে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করেছেন হাওড়া পুলিশের গোয়েন্দারা। তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

মঙ্গলবার দিঘার কর্মিসভায় মুঙ্গের থেকে ধৃত যুবকের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। মমতা বলেন, ‘‘যে ছেলেটার ছবি দেখেছেন, বন্দুক নিয়ে নৃত্য করছে রামনবমীর মিছিলে, রামচন্দ্র কি তাঁকে কানে কানে বলেছিল, তোমরা বন্দুক নিয়ে মিছিল করো, বন্দুক নিয়ে তাক করো।’’ আর এই প্রসঙ্গ তুলেই বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের তুলনা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা সিপিএম করত। সিপিএমের ৩৪ বছরের অত্যাচার দেখেছেন। ভুলে যাননি তো? নন্দীগ্রাম ঘুরেছেন, খেজুরি ঘুরেছেন, তমলুক ঘুরেছেন, কোলাঘাট ঘুরেছেন, চণ্ডীপুর ঘুরেছেন, হলদিয়া ঘুরেছেন?’’ অতীতে হলদিয়ায় সভা করতে গিয়ে যে বাধার মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেই কথাও জানান মমতা।

Advertisement

সোমবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুর সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম দিন প্রশাসনিক সভা করেন খেজুরিতে। মঙ্গলবার দিঘার কর্মিসভায় বলেন, ‘‘আমার আসবার জো নেই। সারাক্ষণ পড়ে থাকতে হয়, কখন বিজেপি গিয়ে কোথায় অশান্তি করবে। এরা বোঝে না, বাংলার মানুষ অশান্তি ভালবাসে না। অশান্তি করা বাংলার সংস্কৃতি নয়। অশান্তি আমরা করি না। মানুষ কখনও অশান্তি করে না। বিজেপির লোকেরা আজ পারে না, তাই অশান্তি করার জন্য বাইরের গুন্ডাদের ভাড়া করে নিয়ে আসে। বন্দুক নিয়ে নৃত্য করছিল যে, ও বাংলার কেউ নয়, মুঙ্গের থেকে এনেছে। এটা অশান্তি নয়, আমি বলি ক্রিমিনাল ভায়োলেন্স।’’ মমতা একই সঙ্গে বলেন, ‘‘বিহারের সব মানুষ এক রকম নন।’’

রামনবমীর মিছিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশের পারমিশন ছিল না। গায়ের জোরে ফলের দোকান পুড়িয়েছে। ঘর পুড়িয়েছে।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘ফলবিক্রেতাদের দোকান করে দিচ্ছি। ঘর করে দিচ্ছি।’’ অশান্তি নিয়ে যে ভবিষ্যতে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে, তা-ও জানিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘যে অশান্তি করবে, গাড়ি পোড়াবে, সরকার তার সম্পত্তি নিয়ে বিক্রি করে যাঁর বাড়ি পোড়াবে, তাঁকে টাকা দেবে। এই আইন করেছি।’’ বলেন, ‘‘আমি নজর রাখছি, কারা ইন্ধন দিচ্ছে, মানুষের রক্ত মেনে নেব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement