ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে গ্রেফতার মুর্শিদাবাদে থাকা এক যুবক। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অলাইন।
বাড়ি বাংলাদেশে। পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের পর জাল নথি তৈরি করে ‘ভারতীয়’ হয়েছিলেন জনৈক মেহের শেখ। বিয়ে করেন মুর্শিদাবাদের রানিনগরের সীতানগরের এক যুবতীকে। তার পর সীতানগরেই বসবাস করতেন। অভিযোগ, শ্বশুরকে নিজের বাবা বলে দাবি করে ভোটার তালিকায় নাম তোলেন মেহের। জাল পাসপোর্ট-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ওই যুবকের খোঁজ পেল পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার ধৃতকে জেরা করে জাল পাসপোর্ট-সহ নকল ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরির একটি চক্র সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
আদতে বাংলাদেশি নাগরিক মেহের ৭ বছর আগে অবৈধ ভাবে ভারতে ঢোকেন। জাল নথিপত্র কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানা এলাকায় বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর আগে ওই এলাকার এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। অভিযোগ, শ্বশুরকে বাবা বলে দাবি করে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেন তিনি। একটি সূত্র মারফত সেই খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে মেহেরের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে গ্রেফতার করা হয়।
বস্তুত, ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার ভবানীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং পাসপোর্ট আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে লালবাজার। অভিযোগ, ভুয়ো নথিপত্রের মাধ্যমে জাল পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার একটি চক্র চলছে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই চক্র সক্রিয়। এর পর থেকে কলকাতা এবং শহরতলির একাধিক এলাকায় হানা দিয়ে সন্দেহভাজনকদের ধরপাকড় শুরু করেন তদন্তকারীরা।
শুধু উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বেশ কয়েক জন গ্রেফতার হন। এ ছাড়া পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হুগলি ইত্যাদি জেলা থেকে বেশ কয়েক জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। পাসপোর্ট জালিয়াতির জাল কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত, কারা এর সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, তত জালিয়াতি চক্রের জট খুলছে। বাড়ছে গ্রেফতারির সংখ্যা। এর আগে কলকাতা পুলিশের এক প্রাক্তন এসআইকে গ্রেফতার করা হয়।