বাঙ্কার উদ্ধারে বিএসএফ জওয়ানেরা। —নিজস্ব চিত্র।
বাগান খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে মিলল জোড়া বাঙ্কার। সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ পাওয়া গেল। গোলাবারুদ থাকার আশঙ্কায় বাগানটির প্রায় দু’বিঘা জমি ঘিরে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করল সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার সকাল থেকে এ নিয়ে শোরগোল ছড়িয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া সুধারঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের কাছে। বিএসএফের আশঙ্কা, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ওই পুরনো বাঙ্কারের ভিতরে বিস্ফোরকও থাকতে পারে। তাই ‘মেটাল ডিটেক্টর’ দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার কফ সিরাপ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর।
সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপ্স অ্যালার্ট’ জারি করেছে বিএসএফ। উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মহড়া চালানো হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সীমান্তের অরক্ষিত এলাকায় বাড়তি নজরদারি ও সতর্কতার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে শুক্রবার পুরনো বাঙ্কার উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। জানা যাচ্ছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনী গোপন সূত্রের খবর পেয়ে প্রায় দু’বিঘা জমির উপর তৈরি একটি বাগানে তল্লাশি শুরু করে। জমিটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। শুক্রবার প্রথমে একটি বাঙ্কার উদ্ধার হয়। সেই খবর পাওয়ার পর থেকে জমিটির মালিকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
পরে বাগানে দু’টি লোহার বাঙ্কার উদ্ধার হয়। বাঙ্কারগুলো খুলে দেখা যায় কয়েক হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশে পাচার করার জন্য বোতলগুলো বাঙ্কারের মধ্যে লুকিয়ে রাখছিলেন পাচারকারীরা।
একটি বাঙ্কার প্রায় ১০ ফুট চওড়া ও ১৫ ফুট লম্বা। উচ্চতাও প্রায় ৮ ফুট। তবে পরের বাঙ্কার দু’টি তুলনায় ছোট। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে থাকা ৩২ ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ড্যান্ট সুজিত কুমার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ দেখেছি, তা ৫ গাড়ি হবে। তবে আমরা গোটা এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছি।’’ এ নিয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, ‘‘ওই এলাকা থেকে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ পাওয়া গিয়েছে কোটি টাকার উপরে। ওই নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ পাচারের উদ্দেশ্যেই রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। বিএসএফ করছে কাজটি। তবে পুলিশও আছে।’’
আর এক দিন পরেই সাধারণতন্ত্র দিবস। সেই উপলক্ষে সীমান্ত এলাকাগুলিতে কড়া প্রহরায় রয়েছে বিএসএফ। তার মধ্যেও পাচারের নানাবিধ ছক কষছেন পাচারকারীরা। শনিবার বাঙ্কার উদ্ধারের জায়গায় ভিড় জমে যায়। যদিও জওয়ানেরা পুরো এলাকাটি ঘিরে রেখেছেন।