প্রতীকী ছবি।
ধর্ষণের ফলে মা হয়েছে উলুবেড়িয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরী। এমনটাই দাবি তার পরিবারের।
কিন্তু সন্তানের জন্মের শংসাপত্র কী ভাবে মিলবে?
প্রায় এক মাস ধরে এ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে ওই কুমারী মা এবং তার পরিবারের লোকেরা। গত ১৭ নভেম্বর উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় বছর চোদ্দোর ওই কিশোরী। ক’দিন আগে তার ছুটিও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সন্তানের জন্মের শংসাপত্র মেলেনি।
কেন?
কিশোরীর বাবার দাবি, হাসপাতালের যে বিভাগ থেকে ওই শংসাপত্র দেওয়া হয়, সেখান থেকে বলা হয়েছিল শিশুর বাবার পরিচয় জানানো না হলে ওই শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব নয়।
মেয়েকে যে ধর্ষণ করেছিল, সে এখন জেলে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখন তার নাম জানাতে বারণ করেছে। তাই হাসপাতালে ছেলেটির কথা বলতে পারিনি। সন্তানের জন্মের শংসাপত্র না-মেলায় উদ্বিগ্ন তার মা-ও।
হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘জন্মের শংসাপত্রে শিশুর বাবা-মায়ের নাম লেখা থাকে। যদি কোনও শিশুর পিতৃপরিচয় না থাকে, তা হলে না-থাকার সঠিক কারণ জানাতে হয়। তারপর মায়ের পরিচয়েই হাসপাতাল ওই শংসাপত্র দিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাই। বর্তমানে সে জেল হেফাজতে রয়েছে। শুনেছি, ওই কিশোরী মা হয়েছে। ওই শিশু এবং অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষায় পাঠানো হবে। তা মিলে গেলে মামলাটি আরও জোর পাবে। সেই কারণে আপাতত অভিযুক্তের নাম কোথাও ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে ওই কিশোরীর পরিবারকে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধুলোশিমলার একই পাড়ার বাসিন্দা হাবিবুল খাঁ নামে বছর তেইশের ওই অভিযুক্ত। কিশোরীকে সে একাধিকবার ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ। ছোট থেকেই পেটের অসুখে ভোগে মেয়েটি। সে জন্য মাঝেমধ্যেই চিকিৎসা করাতে হয়। মাসতিনেক আগে কিশোরীর বাবা-মা মেয়েকে
স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তখনই জানা যায়, কিশোরী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিশোরী হাবিবুলের নাম বলে। কিশোরীর বাবা গত ১৩ নভেম্বর উলুবেড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশ হাবিবুলকে গ্রেফতার করে। গত ১৭ নভেম্বর কিশোরীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
মেয়ের ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন কিশোরীর বাবা। একই সঙ্গে তিনি চান, নাতির জন্মের শংসাপত্র পেতে যেন কোনও বিড়ম্বনায় পড়তে না-হয়।