corona virus

করোনা-রিপোর্ট না জেনে বিধায়ক কেন সভায়, প্রশ্ন

মঙ্গলবার রাতেই স্নেহাশিসের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। আদানের সভায় গিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকার, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। ছিলেন স্থানীয় নেতৃত্বও। রিপোর্ট জানার পর স্নেহাশিস তো বটেই, সাংসদ-সহ সব নেতাকেই গৃহ-নিভৃতবাসে যেতে হয়।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৩:৩২
Share:

প্রতীকী চিত্র

তাঁর জন্য দলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ পাঁচ নেতাকে যেতে হয়েছে গৃহ-নিভৃতবাসে। ফলে, ক্ষোভ তো রয়েছেই, প্রশ্নও উঠছে হুগলি জেলা তৃণমূলের অন্দরে। নিজের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট না-জেনে কেন মঙ্গলবার চণ্ডীতলার আদানে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভার্চুয়াল’ সভা শুনতে গিয়েছিলেন জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী?
মঙ্গলবার রাতেই স্নেহাশিসের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। আদানের সভায় গিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকার, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। ছিলেন স্থানীয় নেতৃত্বও। রিপোর্ট জানার পর স্নেহাশিস তো বটেই, সাংসদ-সহ সব নেতাকেই গৃহ-নিভৃতবাসে যেতে হয়।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘স্নেহাশিসের ওই সভায় যাওয়া উচিত হয়নি। ওঁর আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। ওঁর জন্য বাকিরা বিপদে পড়তে পারেন।’’ সাংসদ কল্যাণ বলেন, ‘‘সে দিনই স্নেহাশিসের থেকে শুনি, ওঁর জ্বর হয়েছিল। আমি তখনই ওঁকে সভা থেকে বাড়ি চলে যেতে বলেছিলাম। ও সভায় না-গেলেই পারত।’’
দলের অন্দরে তাঁর আচরণে প্রশ্ন ওঠায় স্নেহাশিস ‘ব্যথিত’। তাঁর দাবি, ‘‘আমি জেনে-বুঝে গিয়েছি, এমনটা তো নয়। জেলায় দলের আহ্বায়ক আমি। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আদানে সভায় গিয়েছিলাম।’’
স্নেহাশিস ছাড়াও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী-ছেলে, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেহরক্ষী এবং গাড়ির চালকও। স্নেহাশিস জানান, সম্প্রতি তাঁর এবং বাড়ির কয়েকজনের জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা হয়। তাঁর দাবি, চিকিৎসক তাঁদের জানান, বর্ষায় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ওই সব উপসর্গ। ওষুধ খেয়ে তিন-চার দিন তাঁরা ভাল ছিলেন বলেও দাবি স্নেহাশিসের। তিনি বলেন, ‘‘নিশ্চিত হওয়ার জন্য লালারসের নমুনা দিই সকলে। মঙ্গলবার রাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানাতে পারি, আমাদের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ। আমার তো কিছু করার নেই।’’
জেলা বিজেপি নেতৃত্বও মনে করছেন, করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট না-জেনে স্নেহাশিসের দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়া ঠিক হয়নি। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকেরা যেখানে সভা-সমাবেশ বা জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন, যেখানে অনেক নেতানেত্রী এবং প্রশাসনের কর্তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছেদ পড়ছে না। আজ, শুক্রবার শেওড়াফুলি হাটে বিজেপি-র দলীয় কর্মসূচি রয়েছে।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘তৃণমূল বিধায়কের (স্নেহাশিস) দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়া ঠিক হয়নি। কিছু একটা সন্দেহ করছিলেন বলেই তো উনি লালারস পরীক্ষার জন্য দিয়েছিলেন। আমাদের দলের রাজ্য নেতৃত্ব কঠোর ভাবে দূরত্ব-বিধি মানতে বলেছেন। খুব কম লোক নিয়েই কর্মসূচি পালন করছি। কোনও ঝুঁকি নিচ্ছি না। সবাইকেই স্বাস্থ্য-বিধি মানতে বলছি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement