ছোটবেলা থেকে দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধু সময় পেলেই এখান-ওখানে বেড়াতে যেতেন। —নিজস্ব চিত্র।
দুই বন্ধুর ছুটিযাপনের সবচেয়ে পছন্দের জায়গা ছিল পুরী। বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতেন তাঁরা। কিন্তু পুরীর সমুদ্র তাঁদের বেশি টানত। নবম বার সেই সমুদ্রে ডুবেই মৃত্যু হল দুই বন্ধুর। শুক্রবার ওড়িশা থেকে হুগলির শ্রীরামপুরে দুই বন্ধুর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ এলাকা। প্রাণোচ্ছল দুই যুবকের এ হেন পরিণতিতে মন ভার পাড়া-প্রতিবেশীদের।
বুধবার ট্রেনে উঠেছিলেন শ্রীরামপুর বঙ্গলক্ষ্মী বাইলেন এলাকার বাসিন্দা অজয় দাস এবং অরিন্দম দাস। সব মিলিয়ে মোট ছয় বন্ধু পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ট্রেন থেকে নেমে হোটেল পেয়ে যান। বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন রান্নাবান্না করে সবাই খাওয়া-দাওয়া করবেন। তার পর সমুদ্রস্নানে যাবেন। অরিন্দম ভিডিয়ো কলে হোটেলের ঘর দেখিয়েছিলেন। সেই শেষ বার ছেলেকে দেখলেন মা। শুক্রবার বাড়িতে নিথর দেহ ফিরল দুই বন্ধুর।
অরিন্দম বিমা সংস্থায় এজেন্টের চাকরি করতেন। অজয় টোটো চালাতেন। ছোটবেলা থেকে দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধু সময় পেলেই এখান-ওখানে বেড়াতে যেতেন। সঙ্গে থাকতেন আরও কয়েক জন বন্ধু। তবে তাঁরা সবচেয়ে বেশি যেতেন পুরী। সেখানেই দুর্ঘটনা হল। অরিন্দম এবং অজয়ের বন্ধুদের সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁরা সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিলেন। তখনই ভেসে যান অরিন্দম এবং অজয়।
অরিন্দম মায়ের কথায়, ‘‘ছেলে ফোন করে বলেছিল ভাল ভাবে পৌঁছে গিয়েছি। ভিডিয়ো কলে ঘরের ছবিও দেখিয়েছিল। বলল, ‘মা ভাল হোটেল পেয়েছি। ভাড়া ২,১০০ টাকা।’ এর পর আর যোগাযোগ হয়নি। সেই শেষ কথা হল ওর সঙ্গে।’’ অজয়ের দাদা সুভাষ বলেন, ‘‘ভাই টোটো চালাত। সময় পেলে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যেত। এর আগে আট বার পুরী গিয়েছে ওরা। এ বার যে কী হল!’’
কয়েক দিন আগেই পুরীর সমুদ্রে স্নানে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয় হাওড়ার দুই বাসিন্দার। সম্পর্কে তাঁরা বাবা-ছেলে।